Thursday, December 18, 2025

বিজয় তুমি কার?

 বিজয় তুমি কার?

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
***********************************

বিজয়, তুমি কার—হে মা, বলো তো আজ!
মুক্তিযোদ্ধার নাকি স্বাধীনতা বিরোধীদের পদচিহ্নে?
যারা লক্ষ শহীদের রক্তে লেখা লাল-সবুজকে মেনে নেয়নি,
তাদের হাতে কি এ বিজয় হয়, মা?

গলায় টিপেছে যারা বীরদের,
বিকৃত করেছে ইতিহাসের মুখোশ,
আজ সেইদের হাতে লাল-সবুজ পতাকা!
এ কি সত্যিকারের দেশপ্রেম,
নাকি আরেকটি মুনাফিকের হাসি?

রক্তের দাম কোথায়, মা?
বোনের ইজ্জতের দাম কোথায়?
হুজুগে ভরা জাতি কি বোঝে মুক্তির স্বাদ?
হিংসা-প্রতিহিংসার খেলা,
স্বাধীনতার মূল্য কে জানে?
এর চেয়ে লজ্জা আর কি আছে!

বিজয়, তুমি কি শহীদের আত্মত্যাগের সুর,
নাকি বিকৃত ইতিহাসের ছায়া?
তুমি কি বহন করবে সত্যিকারের দেশপ্রেম,
নাকি হবেন মুনাফিকের মুখোশে ঢাকা?

আমরা জানি, মা,
বিজয় সেই, যে চিরকাল স্মরণ করবে
শহীদের রক্ত, মাতৃভূমির মুক্তি,
আর লাল-সবুজের অমলিন চেতনা।

এই বিজয় আমাদের, মা—
সত্যিকারের দেশপ্রেমিকেরই।
লাল-সবুজের দীপ্তিতে,
রক্তের স্বপনে,
বিজয় হবে স্বাধীনতার অমর সঙ্গীত।

বিজয় আমাদের—হে মা, আমাদেরই!
শহীদের রক্ত, মাতৃভূমির মুক্তি,
লাল-সবুজের দীপ্তিতে,
অমর হবে চেতনার বিজয়!


১৮-১২-২০২৫

Thursday, December 11, 2025

দাঁড়ির আলো

 দাঁড়ির আলো

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
******************************************

দাঁড়ি—মুমিনের কাছে শুধু রোমের রেখা নয়,
এ যেন সুন্নতের শীতল ছায়া,
রহমতের বারান্দায় ঝুলে থাকা
একটি ছোট আলো—
যেখানে তাকওয়ার নীরব ছন্দে
দোলা খায় বিনয়, দোহাই আর আনুগত্য।

তবু যারা এর মাঝে রাজনীতির ছায়া খোঁজে—
তারা যেন গোধূলির কোমল আভা দেখে
ধরেছে অগ্নিকুণ্ডের রঙ ভেবে।
দৃষ্টি আছে, কিন্তু দৃষ্টির নূর নেই;
বাহ্যিক চিহ্নে বিচার করে,
অন্তরের আলোতে নয়।

মুমিনের দাঁড়ি কাউকে বিভক্ত করার পতাকা নয়—
এ কোনো দলের ডাক, কোনো মতাদর্শের শ্লোগান নয়;
এ তো কোরআনের অনুগত একটি নীরব রেখা,
রাসূলের সুন্নাহর প্রতি দাসত্বের কোমল ঘোষণা;
যেন সাদা পাতায় ছোট্ট কালো হরফ—
কিন্তু অর্থে গভীর, প্রজ্ঞায় দীপ্ত।

যারা দাঁড়িকে দেখেই ব্যঙ্গের তীর ছোঁড়ে,
তারা যেন শীতের কুয়াশায় পথ দেখে
মরূদ্যানকে মরীচিকা ভাবে।
তারা বোঝে না—
মুমিনের বাহ্যিক ছাপ
হৃদয়ের ইমানেরই প্রতিফলন,
যা মানুষের বিচার নয়—
রবের সন্তুষ্টির জন্য।

মুমিনেরা রাগ করে না—
তাদের ভাষা অভিযোগ নয়, দোয়া;
হৃদয় উন্মুক্ত, নিয়ত পরিষ্কার।
তারা বলে—
হে পরম দয়ালু আল্লাহ,
আপনি তাদেরকে হেদায়েত দিন
যারা দাঁড়ির আলোয় দেখে অন্ধকার,
যারা সুন্নাহর রেখায় খোঁজে বিভেদ।

তাদের চোখে দিন সেই নূর
যা সত্যকে চিনতে শেখায়;
দাও সেই প্রজ্ঞা,
যা বাহ্যিক নয়, অন্তরের সৌন্দর্য দেখে;
দাও সেই সঠিক দৃষ্টি
যা বুঝতে পারে—
দাঁড়ি কোনো রাজনীতি নয়,
এ তো আনুগত্যের সিক্ত ছায়া,
ধর্মীয় শৃঙ্খলার এক পবিত্র পরিচয়।

মুমিনের কথা তাই একটাই—
ঘৃণা নয়, দোয়া;
বিরোধ নয়, শান্তির আকাঙ্ক্ষা।
আর সেই দোয়ায় অটল থাকে তাদের প্রার্থনা—

যারা দাঁড়ি দেখে রাজনীতি খোঁজে
এবং মুমিনকে বিব্রত করে—
মহান আল্লাহ তাদেরকে হেদায়েত দান করুন।
------------------------------------------------------------


১১-১২-২০২৫

বিজয় মাসের কান্না

 বিজয় মাসের কান্না

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*****************************************
আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি—
তবু শুনেছি লক্ষ শহীদের রক্ত-নিঃশ্বাস,
লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের অগ্নিপরীক্ষায়
জন্ম নেওয়া লাল-সবুজের জনন-পতাকা।
সেই পতাকা দেখলেই আমার বুক ঝড়ে ওঠে বজ্র-মাদল,
গেয়ে উঠি: আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি!
১৬ ডিসেম্বরের মুক্তি-গাঁথা, সেই গৌরবগাথা ইতিহাস—
আজ যেন শেকলে বাঁধা, অপমানিত, হুমকির মুখোমুখি!

ফিরেছে সেই শকুনেরা—নতুন মুখোশে, ভণ্ড ধার্মিক বেশে,
দেশবিরোধী বিষের শপথ গোপনে বুকে রেখে।
ওদের খামচে ধরা লাল-সবুজের পতাকা আজ ব্যথায় কাঁপে—
স্বাধীনতার নাম শুনলেই ওরা গর্জে ওঠে বিষনাগের মতো,
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি শুনলেই বুঝি পুড়ে যায় ওদের দেহে
পরাজয়ের সিন্দুকবন্দী লজ্জা!

ওরা স্বাধীন বাংলাদেশ মেনে নেয়নি কোনোদিন,
আজও নেয় না—
সেজন্যই মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করতে পারে,
গলায় জুতার মালা পরায় বীরদের,
শহীদের কবরেও আগুন জ্বালিয়ে নাচে অন্ধ উল্লাসে!
যে গান শুনে পৃথিবীর বুক কাঁপে,
সেই সোনার বাংলাও গাইতে দেয় না—
গলা টিপে ধরতে চায় বাঙালির সুর!

স্মৃতি-ফলক ভেঙে চুরমার,
ইতিহাসকে ধুলোয় মেশায় রাতের আঁধারে,
জুতা পায়ে উঠে শহীদ মিনারের পবিত্র স্তম্ভে—
যেন বিদ্রোহ করে মানবতার বিরুদ্ধে!
ধর্মের আবরণে রেখে করে অধর্মের ভয়ানক বাণিজ্য,
জাতিকে ভুল ইতিহাস খাওয়ায় বিষের থালায়,
স্বাধীন দেশকে করে অপমান—
স্বাধীনতা বিরোধীরাই আজ মুখ খুলে দেয় দেশের পাঠ!

আজ টেলিভিশনের টকশোতেও
স্বাধীনতার বিরুদ্ধে হয় হাসাহাসি, অপমান, বিতর্ক।
বিজয় র‌্যালী বন্ধ—
কোথাও নেই কুজকাওয়াজের গর্জন,
নেই বিজয় শোভাযাত্রার ঢেউ!
ডিসেম্বরের আকাশ আজ নীরব—
বিজয় মাস দাঁড়িয়ে কাঁদে, পরাজয়ের মতো নয়,
অপমানের ভারে, অন্ধকারের বিষধরে।

কিন্তু শোন—
এই কান্না কোনোদিন পরাজয়ের নয়।
এই কান্না দ্রোহের ঢাক, বজ্রের ডাক,
নজরুলেরই মতো অগ্নি-প্রলয়ের সংকেত!

আমি বলি—
লাল-সবুজের পতাকা কেউ খামচে ছিঁড়তে পারবে না!
এ পতাকায় রয়েছে লক্ষ প্রাণের রক্ত-স্বাক্ষর,
এটিকে যে অপমান করে—
ইতিহাসই তার বিচারক হয়ে দাঁড়ায়!

স্বাধীনতার শত্রুরা সাবধান—
বাংলার মাটি ঘুমিয়ে নেই,
এর বুক থেকে আবার উঠবে বজ্র-বিদ্রোহ!
বিজয় মাসের কান্না
একদিন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠবে অগ্নি-বিজয়ে—
কারণ বাংলাদেশকে দমিয়ে রাখার শক্তি
আজও কারো হয়নি, কোনোদিন হবে না!
-------------------------------------------------


১১-১২-২০২৫

Monday, December 8, 2025

স্বাধীনতা কি হুমকির মুখে?

 স্বাধীনতা কি হুমকির মুখে?

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
******************************

লাল–সবুজের পাঁপড়ি ঝরে, অশুভ হাওয়ায় নিঃশ্বাস থামে,
স্বাধীন আকাশ কালো হয়, নিস্তব্ধতায় কান্না নামে।
কৃষ্ণচূড়ার কাননে বসে বিষাক্ত পোকা জেঁকে,
তার লোভালস জিহ্বায় কুটে, স্বপ্নগুলো খায় ডেকে।

প্রহরীরা দেখে শুধু—দেখেই যায়, নীরব ভয়ে,
রক্ত-মাখা পতাকা আজও পড়ে থাকে ভুল প্রশ্নের ছায়া হয়ে।
স্বাধীন দেশে সুবিধাভোগী, মুখে মধু—অন্তরে গ্লানি,
ঘাতকেরা হাসে আড়ালে, বিষে ভরে প্রতিটি বাণী।

জরাজীর্ণ মুক্তির কবিতা, মুছে যায় চরণ ধীরে,
কবির কলম বিক্রি হয়ে পড়ে স্বার্থের বাজার ঘিরে।
কৃষক-শ্রমিক হাত গুটায়, মাঠ পড়ে থাকে শূন্য,
লাল-সবুজের কানন আজ ক্লান্ত, নিঃশ্বাস গিয়েছে রূক্ষ।

দেশপ্রেমের স্পন্দন থামে—হৃদয় যেন পাথর হয়,
নিজের হাতে গড়া স্বপ্নই আজ নিজের বুকেই ক্ষয়।
কি এক আজব জাতি আমরা—নিজেই ভাঙি নিজের ঘর,
অর্জিত সেই স্বাধীনতা আজ দাঁড়িয়ে ধ্বংসের দ্বার!

কেউ বলে না সত্য ইতিহাস—সবাই মুখ ফেরায়,
হিংসা–প্রতিহিংসার আগুনে জাতির মেরুদণ্ড পুড়ায়।
মীরজাফরের উত্তরাধিকার, মুনাফিকের গোপন ছায়া,
স্বাধীনতার কাননে আজ বিষবৃক্ষের মায়া।

হে জাতি, জবাব দাও—আর কত নীরব থাকবি?
আর কত নিজের রক্তে নিজের ভবিষ্যৎ আঁকবি?
লাল–সবুজ কি শুধু রঙ, না শহীদের শপথ-শ্বাস?
ঘুম ভাঙাও, শপথ নাও—বাঁচাও দেশ, বাঁচাও আশ!
----------------------------------------------------------


০৮-১২-২০২৫

মেরুদণ্ডের বজ্রধ্বনি

 মেরুদণ্ডের বজ্রধ্বনি

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*************************************

স্যালুট, ডা. বর্মন!
“সাসপেন্ড করো আমাকে”—
শব্দগুলো বাজে বজ্রের মত, হৃদয়ে দংশন!

ডিজি পাশে, শৃঙ্খলা হাতে ধরে,
কিন্তু তুমি দাঁড়ালে,
ভয় নেই, কাঁচুমাচু নেই,
শুধু সত্যের অগ্নিপাঠ!

এক বনে দুই বাঘ নেই,
এক থিয়েটারে নাটক নেই,
শুধু রক্তে লেখা জীবন,
শুধু দায়িত্বের আগুন।

চেয়ার নেই, টেবিল নেই,
এই কক্ষ শুধু জীবনের যুদ্ধক্ষেত্র,
ডাক্তার কাটা-ছেঁড়া, রোগী বাঁচানো,
অপচিকিৎসার ভয় আছে ছাদে।

মেডিকেলের বহু প্রজন্ম হারিয়েছে মেরুদণ্ড,
যেখানে সিনিয়র বললেই সব ঠিক—
পাকনামি নয়, শিক্ষার আলো প্রয়োজন,
না হলে মৃত্যু হয় রোগীর হাতে।

ডিজি ধমক দেন না পারসোনালি,
জানেন জনস্বার্থের মানে,
তুমি দাঁড়িয়ে দেখালে,
মেধা কিভাবে দাঁড়ায়,
শিরদাঁড়ার শক্তি কিভাবে জ্বলে।

চেইন অব কমান্ড মানে ভয় নয়,
চেইন মানে জীবন,
চেইন মানে শৃঙ্খলা,
চেইন মানে বিপ্লবের নীরব বজ্রপাত।

“আমায় সাসপেন্ড করো”—
শোন তরুণেরা,
শব্দগুলো হলো শিক্ষার আগুন,
শব্দগুলো হলো বিপ্লবের ঝলক।

দেশে হুঙ্কার, শিক্ষা কম,
গর্জন বেশি, সত্যের ঝলক কম,
তবু বর্মন দাঁড়িয়ে রাখল পতাকা—
মেধা, শৃঙ্খলা, সাহসের অগ্নিবিজয়।
----------------------------------


০৮-১২-২০২৫

অদ্ভুদ জাতি

 অদ্ভুদ জাতি

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা

রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর

********************************

এই দেশে জন্ম না নিলে, ভাই,
জানতাম না এমনও জাতি হয়—
যারা রক্তে পাওয়া স্বাধীনতাকে
তুচ্ছ করে, ছুঁড়ে ফেলে ইতিহাসের শূন্য কুয়োয়।

যারা শহীদের রক্তকে বলে “পুরনো গল্প”,
আর মায়ের অশ্রুকে বলে— “অপ্রাসঙ্গিক রোদ্দুর”,
যারা জাতীয় সংগীতের বুকে
পাথর ছুঁড়ে ভাঙতে চায় স্মৃতির শুদ্ধ সুর।

এই জাতি—
স্বাধীনতাকে বানিয়েছে বাজারের পণ্য,
মুক্তিযুদ্ধকে সাজিয়েছে ব্যঙ্গের মঞ্চে,
আর শহীদের নাম লিখেছে
অবহেলার কালো পোস্টারে, সন্ধ্যার আগুন রঙে।

একটি দেশ—
রক্ত দিয়ে কেনা হয়েছিল যেদিন,
সেদিন আকাশ জানত, মাটিও জানত,
আজ সেই আকাশকে জিজ্ঞেস করি—
“তুমি কি ভুলে গেছো ওই আগুনদিন?”

এই প্রজন্ম—
চোখে মোবাইল, কানে মিথ্যার শব্দ,
তারা জানে না—
একটি মানচিত্র শুধু কাগজ নয়,
তা এক একটি কবরের নামফলক।

যারা মায়ের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছিল,
আজ তাদের সাথেই হাত মেলায় যারা,
তাদের বুকে নেই লজ্জার চিহ্ন,
তারা শুধু মুখে আনে “ক্ষমা” শব্দটা।

ধর্মের মুখোশে অধর্মের ব্যবসা,
আর বিবেকের ওপর জমে বরফ,
এই জাতি কি জানে—
একদিন স্বাধীনতা হঠাৎ হারিয়ে গেলে
ফেরত আনে না কোনো নীল মানচিত্র, কোনো দুঃখলিপি পোস্টার?

স্বাধীনতার কথা শুনলেই
যাদের গায়ে ফোসকা পড়ে,
যুদ্ধের নাম নিলেই যাদের ঠোঁট পুড়ে যায়—
ওরা কারা?
ওরা সেই অদৃশ্য শেকড়,
যারা ভেতর থেকে গাছ কেটে দেয়।

হে জাতি—
ঘুম থেকে জাগো, ইতিহাস ডাকছে,
মাটির নিচে শহীদেরা কাঁদছে,
তাদের রক্ত এখনো লাল,
তাদের স্বপ্ন এখনো আগুন।

মনে রেখো—
একটি দেশ হারায় না হঠাৎ,
হারায় ধীরে, নীরবে,
যখন এক জাতি তার শহীদের নাম
হাসির মাঝে ডুবিয়ে দেয়।

আজ যদি না জাগো,
কাল তোমার সন্তানেরাও বলবে—
“আমরা ছিলাম এক অদ্ভুদ জাতি,
যারা স্বাধীনতার দাম বুঝেছিল
শুধু হারাবার পরে।”

অদ্ভুদ জাতি

 অদ্ভুদ জাতি

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
***********************************

এই মাটিতে জন্ম না নিলে, ইয়া আখি,
জানতাম না— রক্তের দাম হয় মিছরি,
শহীদের কবরও হয় তামাশার বস্তু,
আর স্বাধীনতা হয় নিলামের পুতলি।

লাখুঁ শহীদের খুনে লেখা জমিন,
আজ সেই জমিনে কেনো এতো বরফিন?
হৃদয়ে আগুন নেই, চোখে নেই লাজ,
জিন্দেগি হয়েছে শুধু নকল আওয়াজ!

মা’য়ের ইজ্জত— ইতিহাসের আর্তি,
আজ তাকে বলে “গল্প”, “মিথ্যা বার্তি”,
হায়! কিসমত এ উম্মতের? হায়!
নিজের শেকড় নিজেই কাটে লাজে-অলাজ!

আল্লাহ! তোরা কি দেখিস না হাল,
দ্বীনের নাম নিয়ে চলে কিতাল-জাল?
মুখোশ পরে চলে অধর্মের খেল,
হক মরে যায়, বাতিল পায় বল।

শত্রুর বুকে হাত, নিজের বুকে ছুরি,
এ কেমন কাল? এ কেমন অসূর?
হে মিল্লাত! জাগো! তো উঠো, তো ওঠো,
নইলে তোমার নাম হবে শুধু শোক!

যেদিন আজাদি হবে খোয়াই,
সেদিন শুধু চোখ ভেজাবে প্রলয়,
তখন কাঁদবে মানচিত্র, কাঁদবে নিশান,
কিন্তু ফিরবে না আর হারানো ইমান।

আজও সময় আছে—
আজও বাতাসে শহীদের ডাক,
“ঘুম থেকে উঠো, ও গাফেল জাতি!
আগুন হও, নয়তো হয়ো ছাই!”

কারণ ইতিহাস ক্ষমা করে না,
যে জাতি নিজের রক্ত ভুলে যায়,
তার কপালে লেখা থাকে—
অন্ধকার, লাঞ্ছনা, ও চিরকালীন বিলাপ।
-----------------------------------------------


০৮-১২-২০২৫

অদ্ভুদ জাতি

 অদ্ভুদ জাতি

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*********************************************

হে দেশ! হে মাটি! হে রক্ত-ঋণ!
জাগো, জাগো, উঠো প্রজন্মীন!
স্বাধীনতা শুধু শব্দ নয়,
এ শহীদের জ্বলন্ত শপথ-চিহ্ন!

এই দেশে জন্ম না নিলে ভাই,
জানতাম না রক্তও হয় অপমান!
যেখানে শহীদের নাম শুনলে,
কাঁপে না বুক, জ্বলে না প্রাণ!

হে পতাকা! লাল-সবুজ শপথ,
তুমি কি আজ একা একা কাঁদো?
হে সংগীত! ত্যাগের সুর,
কেন আজও অপমান সয় বো?

যে মাটি কিনেছি মায়ের চোখে,
সেই মাটিতেই অবহেলার চাষ,
যুদ্ধের ইতিহাস মুছে মুছে
ভুল শেখায় মিথ্যার বাতাস!

হে রক্ত! হে ত্যাগ! হে শহীদ,
তোমাদের ডাক আজও জীবন্ত!
আমরা কি থাকব নীরব হয়ে?
নাকি হব ঝড়ের মত উত্তপ্ত?

ধর্মের মুখোশ, অন্তরে অন্ধকার,
জিহ্বায় সত্য, হৃদয়ে বিকার,
যারা শত্রুর সাথে হাসে–বসে
তাদের বুকে নেই লজ্জার আঁকার!

জাগো রে দেশ! জাগো রে মন!
ঘুম ভেঙে দেখো ইতিহাস!
দেশ শুধু মানচিত্র নয়—
দেশ মানে লাখ শহীদের শ্বাস!

আজ যদি আমরা না বুঝি,
কাল বেয়ে আসবে দীর্ঘশ্বাস,
তখন বলবে আমাদের ছেলেরা—
“স্বাধীনতা ছিল, আজ তা লাশ!”

হে জাতি! এবার জাগো, জাগো!
ভুলে যেও না রক্তঋণ!
স্বাধীনতা মানে দায়িত্ব—
এ আগুন, এ শপথ, এ দিন!
--------------------------------------------


০৮-১২-২০২৫

Thursday, December 4, 2025

এসো হে বেহেস্তের বাগান

 এসো হে বেহেস্তের বাগান

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
**********************************************

এসো হে মুমিন! এসো হে মুসলমান,
দেখ হে আজ রাওনাট মাঠ গুলশান-এ-ইমান।
তফসিরুল কোরআন রাওশন করে জান—
এ যেন বেহেশতের সুবহ-এ-গুলিস্তান।


দাওয়াতুল হকের নূর ঝরে বারবার—
রাওশন হয় রাহ-এ-সিদক ও ইখলাস-এ-ইখতিয়ার।
অমান উল্লাহ সরকারের সৌফিয়ানা ধ্যান—
জাগায় উম্মতের রূহে নূর-এ-তামান্না, নূর-এ-এহসান।
আটাশ বছর ধরে বয় হাওয়া-এ-করাম,
এই মাহফিল গুলশান-এ-রহমত, গুলশান-এ-জান।


এসো হে মুমিন! শুনো হে বিশ্বজাহান
তফসিরের নূরে জ্বলে রূহ-ও-ইমান…

দিল-এ-মজলিশে যখন দরূদের বরখা পড়ে—
রূহ হয়ে ওঠে নাজুক গুল-এ-নূর, ফোটে আবার জ্যোতিসুধায় ভরে।
মুফাসসিরের কণ্ঠ যেন মেহরাব-এ-গোলজার—
সেখানে শব্দ নয়, নামে লাইলাহর হিকমত-এ-আবরার।
ফেরেশতার সায়া নামে রাওশান-এ-দিলবার—
মাহফিল হয় নূর-এ-মেহর, নূর-এ-নাজর, নূর-এ-কারওয়ান।


এসো হে মুমিন! শুনো হে বিশ্বজাহান
রাওনাট মাঠ আজ নূর-এ-গুলিস্তান…


তওবা-এ-নাসুহা হলো রূহের পরিশান—
তাওবার অশ্রু নেমে আসে গুল-এ-চক্ষুতে, হয় নূর-এ-দান।
কোরআনের কালাম— হাদিয়ে-এ-রাহমান—
যে শুনে, সে পায় হেদায়েত-এ-দিল, খোলে রহমত-এ-দরবান।
এই মাহফিল হলো রূহ-এ-সাফা, রূহ-এ-গোলজার—
এখানে হৃদয় হয় মেহর-এ-নূর, সিজদায় খুঁজে পায় জান।


এসো হে মুমিন! শুনো হে বিশ্বজাহান
তফসির-এ-নূরে রাঙাও নিজের প্রাণ।
রাওনাট মাঠ আজ রাওশন-এ-রহমান—
এ যেন খোদার গুলশান-এ-বেহেশত,
ফিরে এসো হকের পথে, জানান…
--------------------------------------------------


০৪-১২-২০২৫

Wednesday, December 3, 2025

রাওনাট গ্রামের ঐতিহ্য

 রাওনাট গ্রামের ঐতিহ্য

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
***************************************

রাওনাটের মাঠে আজ আগুন—
বজ্র–তুফান–ভীতি ভেঙে ওঠে ঈমানের দাবানল,
দাওয়াতুল হকের তূরী বাজে—
“হে মুমিন! হে লা-ইলাহার সৈনিক! ওঠো, ওঠো সমগ্র রাত জ্বল!”

অমানুল্লাহ সরকারের হাতের মশালে
জ্বলে ওঠে তাওহীদের রুদ্র নক্ষত্র,
তার আহ্বানে গর্জে ওঠে রাওনাট–ডাঙ্গা—
হক বাঁচাও! তাগুত ভাঙো! জুলুমের সিংহাসন করো ছত্রভঙ্গ ছত্র!

হে মুসলমান! কে বলল ভীরু হতে?
কে টেনে নিয়ে গেল দুনিয়ার ফিতনার আঁধারে?
আজ বিদ্রোহ করো!
শয়তানের আড্ডায় আগুন ধরাও, ফিরো হকের দীপ্ত অস্ত্রধারে!

মঞ্চে বক্তার কণ্ঠ—
যেন হুনাইন–বদরের ঘোড়ার খুরের আওয়াজ,
কোরআনের তিলাওয়াতে কেঁপে ওঠে বাতাস—
“ওয়াল-আস্‌র! ইন্নাল ইনসান!”
ঐ ধ্বনিতে ছিন্ন হয় ঘুমন্ত জাতির নিস্তব্ধ সাজ।

উর্দুর আগুন— “তাগুত কি হকুমত মিটাও!”
ফার্সির ঝংকার— “আয়নাতুল হক বারান!”
আরবি বজ্র— “কুম! ফা-অনযির!”
—কাঁপে পুরো মাঠ—
যেন কিয়ামতের পূর্ব-রাতের গর্জন জ্বালান।

তৌহীদি জনতার চোখে আজ রণদীপ্ত লাল,
কেউ আর ভয় পায় না জুলুমকে—
যেন সাহাবীদের সারি এসে দাঁড়িয়েছে
এই রাওনাটের আয়াতে–রহমতের ঢেউকে।

নাতের সুর— “ইয়া রাসূল! ইয়া হাবীব!”—
আকাশ কাঁপে, হৃদয় কাঁদে, বাতাস হয় রৌশন,
এ যেন তাশহীদের মিছিল—
হক, হক, হক!— তাগুতের বেড়া করে ভস্ম ক্ষণেক্ষণ।

এই মাহফিল জলসা নয়—
এ এক ইলমী দাওয়াতের বিপ্লব,
যেখানে শয়তানের বাঁধন ছিন্ন হয়,
ফেরেশতারা নামে দলে দলে—
ইয়াওমুল জিহাদের সুরে জাগায় উম্মতের হৃদয়ের কাব্য-খঞ্জর।

শেষ দোয়ার সময়—
মাঠে আর কান্না থাকে না, থাকে বজ্রধ্বনি,
সবাই চিৎকার করে ওঠে—
“ইয়া আল্লাহ! তাগুত ধ্বংস করো! হককে করো জিন্দা জিন্দা!
আমাদের অন্তরে দাও তলোয়ারের ঈমান,
আর রাওনাট-মাহফিল হোক আগামীর মুক্তির দাওয়ান!”

রাওনাটের এই ঐতিহ্য—
অগ্নিবীণার তারে রচিত ইসলামী বিদ্রোহ,
যেখানে প্রতিটি শ্বাসে জ্বলে ওঠে ঘোষণা—

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ—
হক জিতবেই!
ফিতনা মরবেই!
তাগুত ভেঙে যাবে বজ্র-তুফানের মতন!
-------------------------------------------------


০৩-১২-২০২৫

রক্ত দিয়ে পেয়েছি স্বাধীনতা

 রক্ত দিয়ে পেয়েছি স্বাধীনতা

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
**********************************************

রক্ত দিয়ে পেয়েছি স্বাধীনতা—
এ বাক্য নয়, এক অগ্নিজীবন–ঘোষণা।
একেক ফোঁটা রক্ত ছিল লাল-সবুজের কোড,
ছিল মুক্তির সিগন্যাল— অন্ধকারে জ্বলা আলোদোদুল্যমান মোড।

রক্ত দিয়ে পেয়েছি এই মানচিত্র—
যেখানে প্রতিটি নদী আঁকে শহীদের স্মৃতিচিহ্ন।
যেখানে মাটির গন্ধে লুকানো থাকে
মা-বোনের কান্নার নোনা সাগর–তরঙ্গ,
যুদ্ধফেরতা সৈনিকের অদম্য প্রতিজ্ঞা,
বুকে লুকিয়ে রাখা অসমাপ্ত স্বপ্নের ব্যথা।

রক্ত দিয়ে পেয়েছি স্বাধীনতা—
তাই অপশক্তির ঢেউ এলে বুক থরথর করে না,
বরং আরেক দফা আগুন জ্বলে ওঠে—
প্রতিটি তরুণের চোখে,
প্রতিটি মানুষের চেতনায়,
প্রতিটি সংবেদনশীল হৃদয়ের গভীরে।

যারা ইতিহাস ভুলে যায়—
তাদের জন্য এই লাল-সবুজ
জীবন্ত স্মারক, কঠোর সতর্কবার্তা।
যারা ষড়যন্ত্র আঁকে—
তাদের উদ্দেশে বজ্রের ভাষায় বলে:
“এই মাটি বিক্রির নয়, এই আকাশ কারো দাস নয়!”

রক্ত দিয়ে পেয়েছি স্বাধীনতা—
তাই বুকে শপথ আজো জাগে,
যে শপথ বাতাসে গেয়ে ওঠে—
আমার সোনার বাংলা— আমি তোমায় ভালোবাসি।
এ ভালোবাসা শুধু গান নয়,
এ ভালোবাসা অস্ত্রহীন বিদ্রোহ,
এ ভালোবাসা অদম্য সাহস।

রক্ত দিয়ে পেয়েছি স্বাধীনতা—
তাই দেশদ্রোহীর কালো ছায়া
যতই ঘনিয়ে আসুক—
বাংলার প্রজন্ম দাঁড়াবে আলোর মতো,
রুখে দেবে অন্ধকারের প্রতিটা কৌশল,
ছিন্ন করবে বিদ্বেষের প্রতিটা জাল।

কারণ—
স্বাধীনতা আমাদের দান নয়,
স্বাধীনতা আমাদের রক্তের স্বাক্ষর।
এ স্বাক্ষর মুছবে না কোনোদিন,
এগিয়ে চলবে প্রজন্মে প্রজন্মে—
মহাকালের গর্বিত ডানা মেলে।

রক্ত দিয়ে পেয়েছি স্বাধীনতা—
তাই মাথা নোয়ানো আমাদের জাত-ধর্ম নয়।
------------------------------------------------


০৩-১২-২০২৫

যে জাতি রক্তে লিখেছে

 যে জাতি রক্তে লিখেছে

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*********************************************

যে জাতি রক্তে লিখেছে স্বাধীনতার নাম,
তার তরঙ্গ ওঠে বুকে— বজ্রেরই ধ্বনি–ঝনঝন-ঝমঝম।
অপশক্তির হুঙ্কার যতই ছুটে আসুক পথরোধে,
মুক্তিযুদ্ধের উত্তরসূরী দাঁড়ায় অটল শপথ বেঁধে।

লক্ষ শহীদের রক্তগাঁথা— অগ্নিশপথ রাত্রিদিবস,
ইজ্জতহারা মা-বোনের কান্না— আজো কাঁপায় বিবেকবাস।
বজ্রকণ্ঠে সেই ডাক এখনো জাগায় অন্তর–অগ্নিবীণা,
স্বাধীনতার সোনালি স্বপনে জ্বলে ওঠে মুক্তি–দিনা।

অস্ত্রহারা বাঙালির বুকেও ছিল দুর্জয় শক্তির ঢেউ,
সেই ঢেউয়ে ডুবে গিয়েছিল পরাজিত শত্রু–দেউ।
কোনো অপশক্তি টিকবে না— এ মাটির এ দিগন্তে,
লাল-সবুজের অহঙ্কার জ্বলে চির অবিনশ্বর দান্তে।

আজো দেশদ্রোহীর চোখে ঘুম নেই— কালো ষড়যন্ত্রের ছক,
তবুও জনতার মুঠি ওঠে— রুখে দাঁড়ায় শক্তির ডাক।
স্বাধীনতা-বিরোধীর নীলনকশা ছিন্ন হবে বজ্র–প্রহরে,
বাংলার সন্তান গেয়ে উঠবে— “সোনার বাংলা”— সমস্বরে।

সাবধান! সাবধান! হে দেশদ্রোহী— বাঙালি জাগে অগ্নিতে,
রক্তে লেখা স্বাধীনতার গান বাজে প্রতিটি শিরায়–নিতে।
যে জাতি রক্তে লিখেছে নাম— কখনো মাথা নোয়াবে না আর,
লাল-সবুজ আমার অহংকার— চিরদিন উড়ুক অগ্নিধার!
---------------------------------------------------


০৩-১২-২০২৫

অবলা কুকুরের কান্না

 অবলা কুকুরের কান্না

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
**************************************
হে বিশ্ব! হে মানবতা!
তোমরা কি শুনতে পাচ্ছো
অবলা কুকুরের রক্তমাখা কান্নার রোল,
যেন আকাশ নিজেও কাঁদছে তার সঙ্গে?

আজ সে একা—
অটল, কাঁদছে নিঃশব্দে,
তার আটটি সন্তানের প্রাণ
মানুষের হিংস্র অগ্রাসনে হারিয়ে গেছে।

হে মানব! দেখো—
কী অপরাধ ছিল তার,
কী অপরাধ ছিল তার নিষ্পাপ সন্তানদের?
সে চিৎকার করছে,
কিন্তু তুমি কি শুনছো?
তোমার কানের বাইরে কি গগণ বিদারী আর্তনাদ পৌঁছাবে?

তার বুক ভেঙে গেছে,
তিনশ হাড়ের ভাঙা শব্দে,
মাতৃত্বের রক্তমাখা আকুলতায়।
তার ছোট প্রাণের ছায়া এখন
ভাঙা পথের কোলে লুকিয়ে আছে,
অথচ সে খুঁজছে, হাহাকার করছে,
একটি আশ্রয়ের জন্য,
যেখানে তার সন্তানরা ফিরে আসতে পারে।

হে মানবতা!
আজ সে বিচার চায়—
তোমার বিচার কি এখনো চুপচাপ থাকবে হে বিচারক?
তুমি কি দেখো তার চোখের জল,
যা জমে জমে নদী হয়ে গেছে তার বুকের ভেতরে?

অবলা মা,
তোমার কান্না আমাদের লজ্জা,
আমাদের চুপচাপের অভিশাপ।
আজ আমরা তোমার সঙ্গে কাঁদি,
আজ আমরা তোমার সন্তান হারানোর যন্ত্রণা অনুভব করি,
আজ আমরা শপথ করি—
যে কোন অস্তিত্বকে আমরা আর অবহেলা করব না।

হে বিশ্ব!
শোনো!
একটি অবলা কুকুরের কান্না,
যা মানবতার আড়াল ভেঙে দেয়।
প্রতিটি লাইন, প্রতিটি রোদ্দুর ভাঙা হাহাকার,
আমাদের চোখে অশ্রু,
আমাদের হৃদয়ে ছেদ।
--------------------------------------------------------------


০৩-১২-২০২৫

বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু

 বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*****************************************

মুড়ইর মাটিতে বাজল বিদ্রোহের সুর,
চোখে আগুন, হৃদয়ে স্বাধীনতার পুর।
মা-বাবার শূন্যতা, শিশুসুলভ ব্যথা,
পা ছুটে চলে স্বাধীনতার পথে দিগন্ত দেখা!

যুগান্তরের পত্রিকা, বিপ্লবী কণ্ঠের গর্জন,
কিশোর ক্ষুদিরাম শুনল—“এ হলো দেশপ্রেমের অর্জন।”
রাতের অন্ধকারে অস্ত্রের ছন্দ,
রক্তে লেখা প্রতিশোধের বেণু, জ্বলে চরণে বেণু!

মুজাফফরপুরের রাস্তায় বোমার ঝড়,
প্রক্সি মৃত্যু এলেও ক্ষুদিরাম অচল নয়।
কিংসফোর্ডের পিছু নিল প্রাণ দিয়ে,
তবু স্বাধীনতার অগ্নি দাহ করল অন্তরে ঝড়ে!

গ্রেপ্তার হলো সে, শুধু আঠারো বসর,
কিন্তু সাহসের ঢেউয়ে ভেসে যায় নীরব নবর।
জেলখানার কক্ষে গান, প্রার্থনা ভোরবেলায়,
বন্দেমাতরম! বলে জানালো—মরণ নয়, অনন্ত সঙ্গম বেলায়।

ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে, হাসিমুখে বলল,
“দেশের ডাক শুনে যেতেই হবে, মৃত্যু নয় বন্দন।”
দ্রুত ধূলিকণার মতো উড়ে গেল সে মুক্তির আকাশে,
সাহসের চিহ্ন হয়ে রইল তরুণ হৃদয়ে বিস্ফোরণে!

আজও মুড়ই, নদীয়া, কলকাতা পথ,
শ্রদ্ধায় মুখরিত, জাগে প্রতিটি শক্তি-স্রোত।
ক্ষুদিরাম বসু—বিপ্লবের তরঙ্গ, অমর বীর,
তার নাম উচ্চারিত হয়, তাণ্ডবী ছন্দে, বিদ্রোহী পীর!
------------------------------------


০৩-১২-২০২৫

পশু-ঘাতক নারী

 পশু-ঘাতক নারী

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট, কাপাসিয়া,গাজীপুর
****************************************
হে মানব! আজ আকাশ কেন এত কালো?
কেন বাতাস কাঁপে? কেন নদীর ঢেউ থরথর?
কার আর্তনাদ ছুঁয়ে গেল আরশে-মুয়াল্লা পর্যন্ত?
কেন ফেরেশতারা বিস্ময়ে থেমে গেল মুহূর্তভর?

কারণ,—
এক নারী, এক প্রতীক—অন্ধকারে গড়া,
হৃদয়হীন ছায়া,
মমতাহীন বরফের বাতাস
যে নিজের হাতে ডুবিয়ে দিল
আটটি কচি প্রাণ—
আটটি সদ্যোজাত, কাঁপতে থাকা আল্লাহর রহমতের ফুল।

হে মানব!
এ দৃশ্য শুধু নদীতে ডোবা নয়—
এ যেন ডোবে দয়া, ডোবে আদর,
ডুবে যায় মানবতার আলো।

একটি অবলা মায়ের বুক ছিঁড়ে গিয়েছে—
যে কুকুর-জননী দাঁড়িয়ে কাঁদছিল কেবল,
তার চোখে ছিল—
“হে আল্লাহ, আমার সন্তানের কী দোষ ছিল?”
তার কান্না চলে যায় আসমান ভেদ করে—
আরশ কেঁপে ওঠে সন্তানের এমন নিঃশব্দ শোকে।

হে নারী-প্রতীক!
তুমি কি জানো মাতৃত্ব কী?
মায়ের বুকের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক কী?
যদি তোমার শিশুটিকে কেউ
বস্তায় ভরে ঠাণ্ডা মৃত্যুজলে ছুড়ে ফেলত—
তবে কি তুমি এই আকাশটাকে ক্ষমা করতে?
এই পৃথিবীকে মাফ করতে?
নিজেকে মানুষ বলতে পারতে?

কোরআন তো বলে—
“যে একটি প্রাণ হত্যা করে,
সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করে।”
তাহলে বলো—
তোমার অন্তর কত পাথর হলে
তুমি পারলে আল্লাহর সৃষ্টি—
নবজাত ক্ষুদ্রতম প্রাণের নরম শ্বাস
এভাবে নিভিয়ে দিতে?

রাসূল (সা.)-এর বাণী আজ
রক্তের মতো হৃদয়ে জ্বলে—
“রহমত করো জীবে, তোমার প্রতি রহমত বর্ষিত হবে।”
কিন্তু তুমি তো রহমতের পথ ছাড়লে,
বেছে নিলে কঠিন, অন্ধকার মৃত্যুর গলি।

হে মানব!
দেখো এখন নদীর জলে ভাসছে যে নীরবতা—
ওই নীরবতার প্রতিটি ফোঁটায় লেখা আছে—
“আমাদের বিচার চাই, হে রব!”
আটটি অপলক চোখের আর্জি
আজ ঘুরে বেড়ায় দুনিয়া-আখেরাতের সীমানায়।

মানবতা আজ কাঁদছে,
দয়া আজ নিঃশ্বাস ফেলছে কষ্টে,
ইসলাম আজ তলোয়ার তুলে বলছে—
“অন্যায়কে রুখো!
কারণ দয়া ছাড়া মানুষ—মানুষ নয়,
দয়া ছাড়া হৃদয়—হৃদয় নয়!”

হে মানব!
ফিরে এসো আল্লাহর নির্দেশে—
জীবে দয়া করো,
প্রাণকে ভালোবাসো,
আর নিষ্ঠুরতার আগুন নিভিয়ে দাও
তোমার অন্তরের গভীরতম অন্ধকারে।
-----------------------------------------------------------------


০৩-১২-২০২৫

Tuesday, December 2, 2025

স্বাধীনতার মর্যাদা

 স্বাধীনতার মর্যাদা

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*********************************************

রক্তঝরা মাটির বুক কাঁপে,
শহীদদের চিৎকার—“আমরা বাঁচব চিরকাল, আমরা বাঁচব মুক্তি-পথে।”
মাটি বলছে—“তুমি আমার, আমি তোমার,
এই স্বাধীনতা রক্ষা করো, জীবন দিয়ে দাও!”

নাগরিকরা উঠে দাঁড়ায়, অগ্নির দীপ চোখে,
হৃদয়ে অঙ্গীকার—অন্যায়কে ভেঙে ফেলব,
দেশের প্রতি আনুগত্যে শপথ করি,
সত্যের পথে জীবন উৎসর্গ করব।

দেশদ্রোহীর ছায়া দূরে হোক,
যারা বিক্রি করেছে মাটির মর্যাদা,
ধ্বংসের পথে তারা হারাবে,
শহীদদের স্মৃতি রাখব বুকে, তাদের চিরন্তন আহবান শোনব।

স্বাধীনতা মানে কেবল অধিকার নয়,
এটি সাহস, সততা, ন্যায়ের লড়াই,
দায়িত্ব, ত্যাগ, অদম্য ইচ্ছাশক্তি।
যুদ্ধের স্মৃতি বলে—উঠো! দাঁড়াও!
প্রতিটি পাথর, প্রতিটি নদী,
আমাদের অঙ্গীকারের সাক্ষী।

চোখে অগ্নি, হৃদয়ে আগুন,
নাগরিকরা উচ্চারণ করে—
“এই মাটি, এই প্রাণ,
শহীদদের জন্য, সত্যের জন্য,
আমরা রক্ষা করব স্বাধীনতার মর্যাদা!”

হে জাতি! হে বীর সন্তান!
শপথ করো, লড়ো, রক্ষা করো—
মাটির মর্যাদা, শহীদদের ত্যাগ,
এই স্বাধীনতার সোনালী আলো,
আমাদের অহংকার, আমাদের প্রতিজ্ঞা!
---------------------------------------------------


০২-১২-২০২৫

পন্ডশ্রম

 পন্ডশ্রম

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট, কাপাসিয়া,গাজীপুর
--------------------------------------------------
পৃথিবীর বুকে—
কে আছে কুকুরের লেজকে সোজা করতে?
দগ্ধ দিন-রাত্রি, ঘাম ঝরিয়ে,
কিন্তু শেষ পর্যন্ত—শুধুই পন্ডশ্রম!

ওহ, মূর্খের চোখে
এটাই তাদের মাপকাঠি।
কিন্তু তুমি,
রক্তে স্বাধীনতাভরা জাতি,
মনে রেখো—
পিছু লেগেছে সেই পুরানো শকুনেরা!

রাজাকার, আলবদর, আল সমাসের চক্র,
দেশদ্রোহী, স্বাধীনতা বিরোধী,
আজও ঘুরে বেড়ায়
স্বাধীনতার রক্তের সন্ধানে।
তাদের লেজসোজা প্রচেষ্টা—
শুধুই পন্ডশ্রম! পন্ডশ্রম! পন্ডশ্রম!

তোমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হও,
স্বদেশ চেতনায়,
মুক্তিযুদ্ধের রক্তের আগুনে,
তাদের শ্লোগান ধ্বংস হবে
নিছক ব্যর্থতার ধোঁয়ায়।

পন্ডশ্রম!
শুধু একটি শব্দ নয়,
এটি বিদ্রোহের তীর,
এটি সতর্কবার্তা।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সামনে,
দেশদ্রোহী কার্যক্রম পেছনে,
ইতিহাস চিৎকার করবে—
“এগুলো কেবল পন্ডশ্রম!”

রক্তের স্বাধীনতা তোমার হাতে,
শকুনের লেজ—
সোজা করা অসম্ভব।
অর্থহীন, ব্যর্থ,
অসহায়—
পন্ডশ্রম! পন্ডশ্রম! পন্ডশ্রম!

উদ্দাম আগুনে,
বিদ্রোহী তর্জনী মেলে,
পৃথিবী জানুক—
স্বাধীনতার চেতনাকে কেউ দমন করতে পারবে না।
-----------------------------------------------------


০২-১২-২০২৫

লাল সবুজের চেতনা

 লাল সবুজের চেতনা

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*****************************************
হে নতুন প্রজন্ম, শোনো—শোনো আজ,
লাল-সবুজের চেতনা জ্বলে আগুন মাজ।
রক্তে লেখা সোনার বাংলা, হৃদয়ে বাজে গান,
শহীদদের ত্যাগে জ্বলে চির অমল প্রান।

সবুজের বুক জ্বলে লাল পাঞ্জাবির আলো,
বাঙালির সংস্কৃতি বাজে হৃদয়ে ঝড়ালো।
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, শপথ করো প্রাণে,
মুক্তির অঙ্গীকার অটল থাকুক মানে।

ও হে নতুন প্রজন্ম, জাগো—জাগো! বলো,
লাল-সবুজের পতাকা কখনো নামবে না, জানো।
সত্য ও ন্যায়ের পথে অদম্য হোক পদচারণা,
অন্ধকার যতই ঘন হোক, আলোর দিশা তোমার সাথীানা।

এসো, এসো! হাত মিলাই—মিলাই একত্রে,
স্বাধীনতার পথে অঙ্গীকারে অটল হই একত্রে।
দেশপ্রেমের আগুন জ্বলে অন্তরে উজ্জ্বল,
শহীদদের ত্যাগ স্মরণে হোক সাহসের বাণী মম।

হে নতুন প্রজন্ম, জেগে ওঠো! জেগে ওঠো!
লাল-সবুজের শক্তি, মুক্তির আলো—আমাদের প্রাণ।
সোনার বাংলার গান বাজুক উচ্চে—নতুন দিন,
আশরাফ আলী মোল্লার সুরে শোনাও বিজয়ী সঙ্গিন।
------------------------------------------


০২-১২-২০২৫

বাংলাদেশে অকৃত্রিম বন্ধু

 বাংলাদেশে অকৃত্রিম বন্ধু

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
****************************************
বাংলাদেশের পিপাসিত মাঠে,
যেখানে ধান আর নদীর চোখ ভিজেছে,
সেই মঞ্চে বাজলো গিটার,
জর্জ হ্যারিসনের করুণা,
রবি শঙ্করের সেতার বাঁধনে।

১৯৭১-এর ছায়া ধ্বনিত হলো গান “Bangla Desh”,
বিশ্বের দিকে ছড়িয়ে গেল মুক্তির ডাক,
যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর, শরণার্থী শিবির,
যেখানে সাহায্যের হাত খুঁজছিল প্রতিটি প্রাণ।
তাহা পৌঁছালো তাঁর সুরের তীব্রতার মাধ্যমে।

শুধু শিল্পী নয়, মানবতাবাদী ছিলেন তিনি,
সঙ্গীত হয়ে উঠল মানবিক শক্তি,
যে শক্তি জন্ম দিতে পারে আশা,
যে শক্তি ছুঁতে পারে হৃদয় ও দেশের মাটি।

২৯ নভেম্বর ২০০১, লস এঞ্জেলেসের আকাশে নীরবতা,
কিন্তু বাংলাদেশের হৃদয়ে অমর তাঁর সুর,
আজো বাজে সেই গান,
শরণার্থী ও মুক্তির স্মৃতিতে,
শ্রদ্ধা জানাই অকৃত্রিম বন্ধুকে,
জর্জ হ্যারিসন, বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু।
--------------------------------------------


০২-১২-২০২৫

আদর্শ মানুষের আলো

 আদর্শ মানুষের আলো

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
***************************************

হাজীবাগের ভোরের হাওয়া যেমন
নীরবতায় বুনে রাখে গ্রামের প্রাণ,
তেমনই তুমি—
ডাঃ সামসুল আলম,
মানুষের চোখের লুকানো অন্ধকারে
জ্বেলে দাও প্রার্থনার দীপশিখা।

তুমি চিকিৎসক—
কিন্তু শুধু দেহের নয়,
অসুস্থ মনে ছুঁয়ে দাও শান্তির ওষুধ,
যেন শিশিরভেজা পাতায় ছড়িয়ে থাকা
অলৌকিক নিরাময়ের রস।

তুমি কাউন্সেলর—
ভাঙা মানুষের বুকের ভিতর
শব্দের হাত রাখো,
যেমন আকাশ
ঝড়ের গাল টেনে বলে—
“শান্ত হও, আমি আছি।”

তুমি কবি—
তোমার বাক্য ভোরের আদরের কুয়াশা,
মাথার উপর ঘুরে বেড়ানো দুঃখকে
রুপান্তর করো সাদা-নীল আলোতে।

তুমি দার্শনিক—
একটি প্রশ্নের ভিতর থেকে তুলে আনো
সমুদ্রের মত গভীর উত্তর,
যেন জোছনার ঢেউ
অন্ধকার রাতকে বুঝিয়ে দেয়—
“অস্তিত্ব মানে আলো খোঁজা।”

তুমি অভিভাবক—
গ্রামের প্রতিটি মানুষের চোখে
তোমায় দেখে ভরসার ছায়া,
যেন শুকনো মাটিতে
হঠাৎ জেগে ওঠা কোমল বর্ষার গান।

তুমি কলমধারী চিন্তাবিদ—
সত্যকে খুঁজে ফিরো শেকড়ের ভিতর,
যেন পুরোনো বটগাছ
ন্যায়ের পাতা ছড়িয়ে
ছায়া দেয় পথহারা মানুষকে।

মানুষ যখন মানুষকে ভুলে যায়,
তুমি তখন স্মরণ করিয়ে দাও—
মানবতা কোনো তত্ত্ব নয়,
এ এক নিঃশব্দ দান,
একটি হাত বাড়িয়ে দেওয়া,
একটি হৃদয়ের দরজা খোলা।

হাজীবাগের আকাশ তোমার নামে
ধীরে ধীরে সন্ধ্যার আভা তোলে—
কারণ তুমি সেই আলো,
যার উষ্ণতায়
মানুষ তার নিজের মানচিত্র ঠিক খুঁজে পায়।
----------------------------------------------


০২-১২-২০২৫

বীরপ্রতীক তারামন বিবি

 বীরপ্রতীক তারামন বিবি

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*********************************************

ধুলো–ওঠা গ্রাম, নদীর ধারে কাচারীপাড়া,
চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল এক কিশোরী—
কিন্তু বুকের ভেতর আগুন, চোখে বিদ্রোহী ঝড়।
নাম তার তারামন বিবি—
ইতিহাসের পাতায় যার নামের পাশে জ্বলে উঠে বীরপ্রতীকের তলোয়ার।

রাজিবপুরের নিশ্বাসভারী রাত,
শিয়ালের হাহাকার ফুঁড়ে
সে হেঁটে যায় শত্রুশিবিরের পাশ ঘেঁষে—
সাধারণ মেয়ে সেজে,
কিন্তু চোখে গেরিলা গোপন নকশা।

গমের দানা, ভাতের হাঁড়ি, ছাইভরা চুল্লি—
এসবের আড়ালে সে বহন করত আগুনের বার্তা।
স্টেনগানের ট্রিগারে তার ক্ষুদ্র আঙুল ছুঁতেই
চমকে উঠেছিল রাত,
ভয়ে পিছিয়েছিল রাজাকারদের হিংস্র মুখ।

শব্দহীন পদক্ষেপে সে ছিল ছায়া,
তবু তার অস্তিত্ব জ্বলে উঠত বজ্রের মতো—
যখন পাকিস্তানি মিলিটারি আসে খোঁজে,
তখনো হাসতো তারামন!
কারণ দেশ বাঁচানো মানুষ ভয়ে নয়,
বিশ্বাসে বাঁচে।

রাতের আক্রমণে যখন এলএমজি গর্জে ওঠে,
তারামনের হাতে আলো কাঁপত—
মুক্তির অগ্নিশিখা যেন বন্দুকের মুখে নাচত।
গেরিলা দলে তাকে সবাই ডাকত—
“তারামন আপা— আগুনমেয়ে!”

১৯৭১— বিজয়ের ভোরে
সে ফিরে গেল সাধারণ জীবনে,
কিন্তু তার বুক ভরা সাহস
আমাদের স্বাধীনতার স্তম্ভে খোদাই হলো নীরবে।

দীর্ঘদিন হারিয়ে থাকা বীরত্ব
একদিন আবার আলো পেল—
জাতি বলল,
“এ যে আমাদের তারামন— বীরপ্রতীক, আগুনের কন্যা!”

আজও যখন কুড়িগ্রামের ভোরে কুয়াশা নামে
আমি শুনি তারামনের ছুটে চলা পায়ের শব্দ,
শুনে ফেলি ফিসফিসিয়ে ওঠা যুদ্ধের গান—
স্বাধীনতার মাটিতে তাঁর নাম
একটি বিপ্লবী দীপশিখা,
যা এখনও জ্বলে,
জ্বলতেই থাকে—
বাংলার প্রতিটি সাহসী হৃদয়ে।

তোমাকে সালাম,
হে তারামন বিবি,
হে আগুনের মেয়ে,
হে দুর্জয় গেরিলা,
হে স্বাধীনতার লৌহ–শিখা!

এই ভূমির প্রতিটি শ্বাসে
তোমার বীরত্বের ধ্বনি—
এই দেশের প্রতিটি শিশুর চোখে
তোমারই শেখানো সাহসের আগুন।

আমরা মাথা নত করি,
মুক্তির মাটিতে শ্রদ্ধার ফুল ছড়িয়ে দিই—
কারণ তুমি প্রমাণ করেছো,
স্বাধীনতা শুধু পুরুষের যুদ্ধ নয়;
স্বাধীনতা নারীরও আগুন, নারীরও বিপ্লব।
----------------------------------------------------


০২-১২-২০২৫

Monday, December 1, 2025

উত্তম শিফা দাও হে প্রভূ!

 উত্তম শিফা দাও হে প্রভূ!

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
******************************************

হে প্রভূ, তোমার দরবারে
উঁচু হয়ে গেছে কোটি কোটি হাত,
অশ্রুবান চোখে নামছে এক অদম্য আকুলতা,
রক্তের দেশ আজ তোমার মুক্তি কামায়।

হে খালেদা জিয়া, ফিরে এসো হে,
ফিরে এসো হে, দেখো স্বাধীন জাতি তোমার জন্য জেগেছে।
হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান—
সবই একই কাতারে দাঁড়িয়েছে,
তোমার আপোষহীন ন্যায়নীতির কাছে মাথা নত করে।

জাতি আজ তোমাকে মা মেনেছে,
নেত্রী মেনেছে,
তোমার স্বর্ণালী কর্মচিত্রে ঝলমল করছে
লাল-সবুজ পতাকার প্রতিটি রক্ত বিন্দু।

তুমি না থাকলে ছায়াহীন হবে জাতি,
অভিভাবিকহীন হয়ে যাবে পথচলা,
তোমার আদর্শই দেখায় মুক্তির পথ,
তোমার মমতায় ভরে যায় ভ্রান্ত হৃদয়।

হে আল্লাহ, দাও মুক্তি,
এই জনতার মাতাকে,
গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রীর মুক্তি দাও।
তুমি জানো, চোখে অশ্রু আর হৃদয়ে শিহরণ
কত প্রার্থনার ঢেউ বয়ে গেছে এই দেশজুড়ে।

ফিরে এসো হে নেত্রী,
আমাদের হাতের তলে আবার রাখো
শান্তি, ন্যায় ও অভিজ্ঞতার বাতাস।
এ জাতি তোমার মুক্তিতে একসাথে কাঁদে,
এ জাতি তোমার জন্য প্রার্থনা করে,
এ জাতি তোমার লাল সবুজের অম্লান আলোয়
আলোকিত হতে চায়।

হে প্রভূ, উত্তম শিফা দাও,
তুমি ফিরলে আবার জেগে উঠবে
এই অবহেলিত জাতির মন, শরীর ও প্রাণ।
-----------------------------------------------------------


০১-১২-২০২৫

Thursday, November 27, 2025

প্রেমের আসামী

 প্রেমের আসামী

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
**********************************************

দোষ যদি হয়ে থাকে, সে দোষ আমার নয়—
সে দোষ কেবল অবুঝ হৃদয়ের;
আমি তো চেয়েছিলাম দূরে থাকতে,
কিন্তু হৃদয়–
এই উন্মাদ সত্তা—
বারবার ছুটে গেছে তোমার দিকে
ঝড়ের ভেলায় ভেসে যাওয়া পাতার মতো।

আমি কখনো চাইনি তোমাকে ছুঁতে,
চাইনি দেহের গরম নিশ্বাস,
চাইনি যৌবনের আগুনে পুড়তে—
আমি শুধু চাইছিলাম
তোমার হৃদয়ের জানালায়
একটুখানি আলো হয়ে থাকতে,
তোমার নিঃশ্বাসের ভিতরে
একটি কবিতা হয়ে বেজে উঠতে।

তুমি কিন্তু শুনলে না
হৃদয়ের মহাকাব্য,
দেখলে না
তার গোপন অলংকার,
তোমার কান পৌঁছায়নি সেই সুরে
যেখানে আমি নাম ধরে ডেকেছিলাম
শুধু অনুভবে,
শুধু ব্যথায়,
শুধু অবুঝ ভালবাসায়।

আর তুমি?
না বুঝেই দোষারোপ করেছ আমাকে—
যেন প্রেম করা অপরাধ,
যেন ভালোবাসা এক দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া।
তাই বলো—
এখানে আমার দোষটা ঠিক কোথায়?

যদি শাস্তি দিতেই চাও,
আমার হৃদয়কে দিও—
ভালোবেসে, গভীর করে,
যেন সে বুঝতে পারে
এ দুনিয়ায় সবচেয়ে মধুর দণ্ড
হলো তোমার প্রেমের কারাগার।

আমি কিছু চাইনি—
শুধু তোমার হৃদয়ের ভেতর
একটি খালি আসন,
একটি নরম অন্ধকার
যেখানে আমি বন্দী হতে পারি
তোমার স্মৃতির সশ্রম কারাদণ্ডে।

আমি হতে চাই
তোমার হৃদয়ের আসামী,
প্রেমের আজীবন সাজাপ্রাপ্ত—
যার শেকল শুধু তোমার নাম,
আর মুক্তির চাবি
তোমার একটুখানি হাসি।

প্রেম যদি অপরাধ হয়—
তবে আমাকে দাও সেই অপরাধে ডুবতে,
আমাকে বানাও তোমার
চিরন্তন প্রেমের আসামি।
-------------------------------------------------------


২৭-১১-২০২৫

প্রেমের কি এক শিহরণ!

 প্রেমের কি এক শিহরণ!

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
**************************************

ওই ফুল–কাননের নরম বুকে আজ
গোলাপের ছোট্ট ডালে ফুটেছে দুটি নবীণ কলি—
মনে হলো দু’টি চোখ, অপলক চেয়ে আছে
আমারই দিকে, নিঃশব্দে, নিঃস্পন্দে,
এক আশ্চর্য প্রেম-দর্শনের মুগ্ধতায়।

আমিও হারালাম সেদিকে,
সুহাসিনী সেই কলির গভীরে—
ঠিক যেন হৃৎসিন্ধু বেয়ে মধুর নহর
ঝর্ণার মতো ঝরে পড়ছে অশব্দ সুরে।
গোলাপের পাপড়ি বুঝি আজই ফুঁটে যাবে,
তার আগে চাই ছুঁয়ে দেখতে—
মন চায় ছিঁড়ে নিয়ে রাখি
হৃদয়ের গোপন ফুলদানিতে,
যেখানে যুগ যুগ ধরে জমে থাকে
অস্পর্শিত প্রেমের রক্তিম দ্যুতি।

শরীর জুড়ে কি এক উথাল–পাতাল ঢেউ!
রোমান্টিক দর্শনের সব আলো যেন
একত্রে নেমে এলো এ মুহূর্তে—

সব মিলেমিশে আজ বুকের ভেতর
এক দুরন্ত ঝড়—
কলি দুটো ডাকছে যেন ফিসফিস সুরে:
“এসো, আমাদের মধুর ঝর্ণাধারা বেয়ে
ডুবে যাও গভীর নদীর অতলে—
উত্তাল স্রোতধারার সঙ্গী হয়ে।”

নদীর বুকও আজ ফুলে ওঠে অশান্তভাবে—
রঙিন ঢেউয়ে দোলে প্রেমের কাব্য,
আর আমি—
সেই ঢেউয়ের তৃষ্ণার্ত যাত্রী,
নেমে যাই অন্তহীন রোমান্টিক স্রোতে,
যেখানে তুমি, গোলাপকলি—
আমার সমস্ত জাগ্রত স্বপ্নের একমাত্র বসন্ত।
-----------------------------------------------------


২৭-১১-২০২৫

আজকের পরাজয় আগামীর বিজয়

 আজকের পরাজয় আগামীর বিজয়

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট, কাপাসিয়া,গাজীপুর
*********************************************
ওহে শুনো!
আজকের পরাজয় নহে আগামীর অন্ধকার—
এই ক্ষতই হবে আগামী যুদ্ধের অগ্নিরণঙিন সোপান,
আজকের হেরে যাওয়া তলোয়ারেই
আগামীর বজ্র-প্রতিশোধী শাণ।

তোমাদের বিজয়-উল্লাস
হয়তো থেমে যেতে পারে উগ্রবাদের মদিরায়,
যেখানে মানুষ ভুলে যায় মানুষকে—
হিংস্রতা উঠে দাঁড়ায় রাজার বেশে,
স্বাধীনতার নামে জেগে ওঠে শৃঙ্খল-ছায়া।

বিজয় মানে উগ্রতা নয়—
বিজয় মানে প্রতিশোধের আগুন নয়,
অধিকার কেড়ে নেওয়ার পাষাণ নয়,
ফ্যাসিবাদের রক্ত-বাষ্প নয়,
স্বৈরাচারের লোহার নখর নয়,
অপমান-অপদস্তের বিষধর নয়,
ক্ষমতার পেশী প্রদর্শনের গর্জন নয়—
বিজয় হলো পুষ্পের মতো ছড়িয়ে পড়া সুবাস,
নিঃস্বার্থ পাপড়ির নরম ঘ্রাণ,
মানুষের হৃদয়ে মুক্তির বাতাস।

বিজয় হলো জনতার উৎসব—
যেখানে শিশুর হাতে থাকে আলো,
বৃদ্ধের কণ্ঠে শান্তির দোয়া,
নারীর হাসিতে স্বপ্নের শহর জ্বলে।

যদি সে বিজয় হয় স্বেচ্ছাচারের অশ্বত্থ তলায়
ছায়া-কুয়াশা হয়ে দাঁড়ানো অত্যাচারের বৃক্ষ—
তবে সে বিজয় নয়,
আগামী পরাজয়ের ভয়ঙ্কর অমঙ্গলের ফাঁদ।

আজকের উন্মাদনা যদি হিংসার উল্কি আঁকে,
তবে তা আগামী ধ্বংসের বিলাসিতা—
যেখানে শহর ভাঙে, মানুষ ভাঙে,
আর ইতিহাস কাঁদে
মানুষের ভুলে লেখা মানুষের শোকগাথা।

ওহে শুনো!
পরাজয় আজ কেবল ক্ষণিকের ঝড়—
এই ঝড়ের ভেতরেই জমে ওঠে
নতুন দিনের শক্তি, বীজ, আর আলো।
আজ যাকে বলো পরাজয়—
কাল সে-ই হবে বিজয়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল প্রভাত,
যদি হৃদয় থাকে শুদ্ধ,
আর বিজয় হয় মানুষের—
মানুষের মুক্তির,
মানুষের সুবাসের মতো।
-----------------------------------------------


২৭-১১-২০২৫

ভয়ানক ভাইরাল সংস্কৃতি

 ভয়ানক ভাইরাল সংস্কৃতি

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
****************************************

দিক–দিক ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাল অগ্নিকুণ্ড,
মানুষ হয়ে গেছে মাগল উম্মাদ।
ফেসবুকের ঝলক, ইউটিউবের ঝলমলে ফ্ল্যাশ,
টিকটকের নাচে নৃত্য, ইন্ট্রোগ্রামের ফিল্টার—
সব ফাঁদ, সব কৌতুক, সব উলঙ্গতা।

যুবক–যুবতী, বৃদ্ধ–বৃদ্ধা,
সবাই লিপ্সায় আবদ্ধ,
অসীম প্রতিযোগীতায় হারিয়েছে মানবিকতা।
গুজবের বন্যা, মিথ্যার ঝড়,
ফটকাবাজির ছায়া সবখানে—
সত্যের মুখে দাঁড়াতে নেই কেউ।

বেহায়াপনা ছড়ায় চুপিচুপি,
ডিজিটাল নোংরামি ভর করে মন।
হাসি আড়াল করে ক্ষুদ্র অহংকার,
“ভাইরাল হলেই আমি বড়”—
কেউ বোঝে না, অন্তর শূন্য।

ডিজিটাল সন্ত্রাসের ছায়া পড়ে ঘর-বাড়ি,
স্মৃতিশক্তি মলিন, হৃদয় হিমশীতল।
ফেসবুকের চ্যাটে, টিকটকের কমেন্টে
নিন্দা আর বিদ্রূপ—সবার খেলা।
মুখে হাসি, অন্তরে ব্যাধি,
নৈতিকতার মৃত্যু হয়ে গেছে ভীষণ সাধারণ।

এই ভাইরাল সংস্কৃতির চক্রে আমরা বন্দী,
বুকের ভেতর ক্ষুদ্রতম আনন্দও নষ্ট।
দিক–দিক তাকাও, চোখ মেলে দেখো,
ভাইরাল পৃথিবীর নোংরামি—
কতোটা ভয়ানক, কতোটা মর্মান্তিক!

মানুষ একে বলে “মজা”, আমি দেখি সন্ত্রাস।
হৃদয় খোঁচা খায়, চিৎকার করে,
কেউ শোনে না—সব ভেসে যায় ভাইরালের ঢেউয়ে।
------------------------------------------------


২৭-১১-২০২৫

সুবোধ তুই পালিয়ে যা

 সুবোধ তুই পালিয়ে যা

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*******************************************

সুবোধ! তুই পালিয়ে যা,
নদীর মতো সত্যও আজ চিত্তরক্ত,
রাজনীতির খাঁচায় চেঁচামেচি,
হিংসা-মিথ্যার আগুন জ্বলে চারিদিকে।

বাজারে হাসে লোভের মুখোশ,
শিক্ষার ক্লাসরুমে শোনা যায় শুধু কাগজের কথা,
শুধু নোটের দাম,
কাগজে লেখা মরীচিকা!

দুর্নীতি শপথে লুকিয়ে আছে,
মিথ্যা মামলার ছায়ায় ভেঙে পড়ে সাহস।
অত্যাচারের পা চেপে ধরে হৃদয়,
অনাচারের জলে ভেসে যায় মানবতার আশা।

সমাজে তোর স্থান নেই, সুবোধ!
যেখানে সত্য বললে শাস্তি,
যেখানে ন্যায়ের কণ্ঠস্বরে আঘাত,
তোমার চুপ থাকা বাঁচায়,
চুপ থাকা বাঁচায়, চুপ থাকা বাঁচায়।

পালিয়ে যা, সুবোধ! পালিয়ে যা!
নিজের ভিতরে আলো ধর—
যেন অন্ধকারের গহ্বরেও
উজ্জ্বল হয় ন্যায়ের দীপ।

হ্যাঁ! সময় আসবে, সত্য নদী বয়ে যাবে,
হ্যাঁ! সূর্য উঠবে ন্যায়ের কিরণে,
তুই ফিরে আসবি,
তোর অস্তিত্বের দীপ্তিতে
সমাজের চোখে জ্বালাবে আগুন!
---------------------------------------------------


২৭-১১-২০২৫

নদীতে জন্ম নদীতেই মৃত্যু

 নদীতে জন্ম নদীতেই মৃত্যু

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
********************************************

নদীতে জন্ম, নদীতেই মৃত্যু,
বিয়ে হয় আজব রীতিতে,
নৌকা ভাসে ঢেউয়ের তলে,
হাওয়ায় গল্প ভেসে আসে পলকে।

স্থায়ী ঘর নয়, শুধু জল আর বাতাস,
জীবন কাটে ঢেউয়ের ছন্দে, ছায়ার সাথে।
মাছ ধরা, জাল আঁকা, হালকা জামা-ধুতি,
বাঁশের ঘর, নৌকা—হাতের শিল্পে রঙের ছবি।

লোকগানের ছন্দ, ঢোল-বাদ্যের তালে,
নদী ভেসে যায় জীবনের কাব্যে।
উৎসব, বিবাহ, শোক—সব জলই সাক্ষ্য,
নদীর তীরে লেখা জীবনের স্বাক্ষর অমলিন।

খাবার—মাছ, শাক-সবজি, শস্য—
নদীর উপহার, সরাসরি রান্না।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাজার—চ্যালেঞ্জের ঢেউ,
তবু নদীর সঙ্গে সম্পর্ক অটুট, ছন্দে ভরা।

পুরুষের হালকা জামা, মহিলার রঙিন শাড়ি,
উৎসবের সাজে হালকা গহনা, নদীকে নमन করি।
নৌকা-উৎসব, মৌসুমি উৎসব, মাছধরার খেলা,
প্রতিটি ঢেউয়ে লেখা—জীবন, সংস্কৃতি, আচার-বেলা।

বেদেরা শুধু মানুষ নয়, নদীর সন্তান,
জল, স্বাধীনতা, ঐতিহ্যের চিরন্তন প্রতীক।
নদীর গল্প, নৌকা, গান, হস্তশিল্প, আচার, জীবন—
সব ভেসে চলে, ছন্দে ছন্দে, আজও।
----------------------------------------------


২৭-১১-২০২৫

সুপ্ত প্রেম

 সুপ্ত প্রেম

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা

রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
******************************************

আমার হৃদয় জ্বলছে।
নিঃশব্দে, অবিরত।
তোমার নাম লুকিয়ে রেখেছি চোখের জলেতে।

কেউ বুঝবে না।
কেউ জানবে না।
কতবার আমি চুরি করেছি আমার অস্তিত্ব তোমার জন্য।

প্রতিটি নিঃশ্বাসে তুমি।
প্রতিটি ব্যথায় তুমি।
অগ্নিকুণ্ডের ভিতরে জ্বলছি,
পুড়ে ছাই হয়ে যাই, নিঃশেষে।

বলতে পারিনি।
ভালোবাসা চুরমার হয়ে গেছে অন্তরে।
প্রতিটি রাত, প্রতিটি ঘুম—
অশ্রুজলে ভাসে তোমার অভাব।

একদিন পৃথিবী জানবে, হয়তো কেউ জানবে।
এই প্রাণ ভালোবেসেছিল কাউকে।
কিন্তু বলা হয়নি।
শুধু একজল ফুলে থাকবে আমার শ্রদ্ধা।

আমার প্রেম—
নীরব, অদৃশ্য,
অশ্রুজলে লেখা মহাকাব্য।
দ্বন্দ্বহীন, পবিত্র।
চির অবিনশ্বর।
মৃত্যুঞ্জয়ী।

একদিন কেউ এসে বলবে—
“আমিও তোমাকে ভালোবেসেছিলাম। কেন তুমি বলনি?”
এভাবেই তুমি হয়ে যাবে আমার জীবনের একমাত্র গোপন আগুন।
--------------------------------------------------


২৭-১১-২০২৫

পাগলেরাই সভ্যতার স্থপতি

 পাগলেরাই সভ্যতার স্থপতি

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট, কাপাসিয়া,গাজীপুর
****************************************

পৃথিবী চিৎকার করছে—
“পাগল! উম্মাদ! কাফের! বিদ্রোহী!”
কিন্তু তারা জানে না, তারা দেখেনি,

পৃথিবীর রঙিন চশমা ধরে
যারা দেখেছে অদ্ভুত দিক, অজানা আলো,
তাদেরই মানুষ বলেছে পাগল, উম্মাদ, কাফের।
যারা স্বপ্নের খনি খুঁড়েছে,
তারা শুধু রঙিন ধোঁয়া পেয়েছে,
কেউ দেখেনি তাদের হাতে জ্বলন্ত দীপ,
যা অন্ধকারে আলো ছড়ায়।

নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, বডলার, থোরো—
ওদের কবিতার শব্দে, বিজ্ঞানী ও দার্শনিকের খুঁটিনাটি খুঁজে
প্রকৃতি, জ্ঞানের সেতু, নক্ষত্রের নাচ—
পৃথিবী পেয়েছে আলোক বিন্দু।

অসভ্য নিন্দুকেরা
শুধু দিতে পেরেছে পাগল, উম্মাদ, কাফের।
ওরা দিল না সৃজনের চাবি,
দিল না উন্মাদ আত্মার মুকুল।

পাগলদের হাতে রচিত পৃথিবী
একটি নদীর মতো প্রবাহিত,
যেখানে প্রতিটি ঢেউ
ধ্বংসকে পরিণত করেছে সৃজনের সিঁড়িতে।
একটি আগুনের মতো জ্বলছে
যা ছড়িয়ে দিচ্ছে অজানা আলো।

তারা হেঁটেছে অনির্ধারিত পথে,
মেঘের ভেতর দিয়ে, ঝড়ের মাঝখান দিয়ে,
তাদের পিছু নিয়েছে শুধুই বাতাসের ফিসফিস।
পৃথিবী আজ তাদের গল্পে জেগে আছে,
নিন্দুকেরা আজও বাইরে দাঁড়িয়ে চুপচাপ।

পাগলেরাই সভ্যতার স্থপতি,
যার কল্পনায় জন্ম নিয়েছে শহর, গান, নক্ষত্র, বিজ্ঞান।
যাদের পৃথিবীকে মানুষ জানে শুধু অদ্ভুত নাম দিয়ে,
তাদেরই হাতে লেখা ইতিহাস,
যা অজানা নদী হয়ে ছুটে চলে কালজয়ী।

পৃথিবী বলে পাগল,
কিন্তু পাগলই আনে আলো, আলো,
পাগলই বানায় পথ, পথ, পথ,
যেখানে নিন্দুকেরা কেবল ছায়া, ছায়া,
পাগলই অগ্নিস্ফুলিঙ্গে ছেঁড়ে দেয়
নতুন দিগন্ত!
জ্বলুক আগুন! শিহরণ ছড়াক! বজ্রপাত হোক প্রতিটি পদে!
---------------------------------------------------------


২৭-১১-২০২৫

নগ্নতার চর্চা

 নগ্নতার চর্চা

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
**************************************
আমি বিদ্রোহী কণ্ঠ!
আজ আবার ঝড় তুলে বলি—
হে পাষাণ যুগের নতুন সন্তানেরা,
এ কোন উলঙ্গতার নগরী গড়লে?
যেখানে মানুষ নয়,
দেহের চামড়া রাজা—
নৈতিকতা সেখানে ভিখারি হয়ে
দরজায় দরজায় কাঁদে!

হে যুগ! তুমি কি অন্ধ হলে?
অশ্লীলতার আগুনে পুড়িয়ে দিলে
লজ্জার শেষ পাতাটুকুও?
মানবতার বুকে আজ
শৃঙ্খল নয়—
গলিত লোভের আগুন ঝরছে,
মানুষের চোখ হয়ে উঠছে
হিংস্র নেকড়ের নখ!

নারী—
যে ছিল মমতার মন্দির,
সংস্কৃতির গর্ভ—
তাকে আজ বানালে তোমরা
মঞ্চের প্রদীপ,
দেহের নেশা-বাজারের
চকচকে চামড়ার ক্যানভাস!
শাপ তোমাদের আধুনিকতার—
যা নারীর মর্যাদাকে
উন্মোচন করে
জন্তুদের উল্লাসে নিক্ষেপ করে।

আর পুরুষ!
যে ছিল রক্ষক,
সে-ও আজ অভিযুক্ত,
কারণ তোমাদের উন্মাদ যুগ
নারীকে পণ্যে নামালে—
আর পুরুষকে
ধর্ষকের মুখোশে!

এই যে সভ্যতার পোড়া শহর—
এখানে মানুষ পোশাক পরে না,
পরিধান করে
লোভের চামড়া,
লজ্জাহীনতার বিষদাঁত!

আমি বজ্র!
আজ চিৎকার করে ঘোষণা করি—
যে সমাজ দেহ দেখিয়ে বাঁচে,
সে সমাজ আত্মা হারিয়ে মরে!
যে জাতির চোখে
লজ্জার আলো নিভে যায়—
সে জাতিরাই একদিন
নিজেদেরই হাত ধরে
অবনত হয় জাহান্নমের সিঁড়িতে!

উঠো মানুষ!
তুলে ধরো সত্যের তরবারি,
কেটে ফেলে দাও নোংরা আধুনিকতার শিকল—
যে শিকল মানুষকে টেনে নিয়ে যায়
অন্ধকারের অগ্নিখাদে।

আমি বলি—
ফিরে আনো লজ্জা—
ফিরে আনো মানবতার পবিত্র আবরণ!
নইলে পৃথিবী
আর মানুষ থাকবে না—
থাকবে শুধু ধ্বংসের পোড়া ছাই,
যার নাম হবে—
নগ্নতার মহামৃত্যু।
-------------------------------------------


২৭-১১-২০২৫

Wednesday, November 26, 2025

হে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম

 হে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
****************************************

হে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম!
পড় হে তোমার প্রভুর নামে,
যিনি তোমায় রচনা করেছেন মহাশক্তিতে,
তোমার রক্তে লিখেছেন স্বাধীনতার গান!

জ্ঞান অন্বেষণে ছুটে যাও,
দিগন্ত ছুঁয়ে দিগন্তে,
মন তোমার হোক অটল, অদম্য,
সমুদ্রের মতো উচ্ছ্বসিত, অশেষ, অবিনাশী!

আলো হোন, হে জাগ্রত প্রজন্ম!
জ্ঞানালোকের প্রতিটি কণায় নিজেকে পবিত্র করো,
অন্ধকার ভাঙো,
অগ্নি হয়ে জ্বালো অন্তরের প্রদীপ,
মশাল হয়ে ছড়িয়ে দাও সত্যের দীপ্তি!

ছুঁড়ে ফেলো মিথ্যার শৃঙ্খল,
বলো—হে তুমি বীর!
মানবতার দূত তুমি,
পিতামাতার অহংকার,
স্বদেশের রক্তবিন্দু হয়ে জ্বলো তুমি!

মাথা নত করো না জুলুমের সামনে,
চোর, বাটপার, নেশাগ্রস্ত—তুমি নও।
তুমি বিপ্লবী, প্রতিবাদী,
হৃদয়ে আগুন, চোখে অগ্নি,
তুমি আশার প্রদীপ,
নতুন দিনের সূর্যসন্তান!

হে প্রজন্ম!
তুমি নতুন দিগন্তের স্রষ্টা,
স্বপ্নের পথে অপ্রতিহত সাহসের বাণী,
নতুন যুগের গান, নতুন পৃথিবীর আলো!

বলো! বলো! চিৎকার করো!
হে তুমি, মাথা নত করো না!
হে তুমি, অন্ধকার ভাঙো!
হে তুমি, আলো হও এই ভূমণ্ডলে!

উঠো! লড়ো! জাগো!
তুমি নবপ্রভাতের জ্যোতি,
তুমি স্বাধীনতার ডাক,
তুমি—হে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম—অমর!
---------------------------------------


২৬-১১-২০২৫

সেই প্রথম দেখা

 সেই প্রথম দেখা

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
***********************************

পথের ধুলোয় ভেজা দুপুর—
হঠাৎই থমকে দাঁড়ানো আমার;
প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েই
অদ্ভুত এক আলো নেমে এলো অন্তরে—
ফুলবাগানের কোণে লুকিয়ে থাকা
দুটি সতেজ কলি
হৃদয়ের ভেতর এক ঝড় তুলল নিঃশব্দে।

যেন প্রথম দেখায় জন্ম নিল
অচেনা এক শিহরণ,
আঙুলের ডগায় কাঁপতে থাকা
অদৃশ্য কোনো স্পর্শ—
যদিও ছুঁতে পারিনি,
তবুও কল্পনায় তাদের রূপ
নরম বাতাসের মতো এসে
গায়ে লাগল, মন ভিজল,
স্বপ্নে ফুটল আলোর রেখা।

সেই কলিদুটি ছিল
বৃষ্টিভেজা ভোরের মতো সতেজ,
চৈত্রের রোদে জন্মানো
দু’ফোটা কিশোর রঙের মতো কোমল।
আজো ভাবি—
আছে কি তারা আগের মতো?
না কি পূর্ণতা পেয়ে
ফুল হয়ে ঝরে গেছে
কোনো অচেনা বাতাসের বুকে?

মৌমাছিরা কি আজো
তাদের সুবাসে মাতাল হয়ে নাচে?
না কি আমিই শুধু—
সেই প্রথম দেখা কল্পনার রঙে
বেঁধে রেখেছি নিজেকে?

যা-ই হোক, সত্যি একটাই—
সেই প্রথম দেখা কলিদুটির আকুলতা
আজো বুকের ভেতর ছোটে
উন্মনার মতো।
হয়তো কোনোদিন—
হয়তো কখনো,
আমার হাতের মুঠোয়
লেগে যাবে তাদের গন্ধ;
মেটে যাবে এই দীর্ঘদিনের সাধ,
শান্ত হবে অনন্ত দহন—
হয়তো, অথবা কখনোই নয়।

তবু মনে হয়,
যদি আবার সেই পথে যাই—
প্রকৃতি হঠাৎই
তোমাকেই আবার দেখাবে,
সেই প্রথম দেখা
সতেজ কলির রূপে।
-------------------------------------------------------


২৬-১১-২০২৫

প্রেমের কলি

 প্রেমের কলি

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*************************************************

অজান্তেই হৃদয়ের বাগিচায়
উঁকি দিল লাজুক এক কলি—
হালকা অভাবের ঢেউ উঠত মনে,
কি অদ্ভুত অনুভূতি, নামহীন, ধরা-না-পড়া চলি।

সে কে? তখনো জানা হয়নি,
তবু শূন্যতার মতো কেউ যেন পাশে হাঁটত ধীরে…
ষষ্ঠ শ্রেণীর সিঁড়ি পেরিয়ে
জীবন উঠছিল ক্লাসের পর ক্লাস—
হঠাৎ একদিন দেখি,
সে নেই!
দূর অচেনার পথে মিলিয়ে গেছে নিঃশব্দ বাতাস।

ঠিক তখনই রাঙা ঠোঁটের
সেই দিনের মুসকি-হাসি
মনে বাজাল আলো-ছায়ার সুর—
তাকে না দেখার ব্যথায়
বারবার বুকের ভেতর কেঁপে উঠল নীরব পূর।

সেইদিনই বুঝলাম—
বুকের গভীরে কোনও কথা
নিঃশব্দ আগুন হয়ে জ্বলে…
বলতে চেয়েছি হাজারবার,
কিন্তু শব্দগুলো আটকে থাকত শিমুল-ফুলের ডালে।

হৃদয়ের বাগানে প্রেমের সেই কলি
দু’চোখ বন্ধ করলেই
পাপড়ি ছড়াতে ছড়াতে ধীরে ধীরে ফুটত—
হঠাৎ যেন
একদিন পূর্ণতা পেল!
একটি পূর্ণ-ফুল হয়ে সুবাসে আকাশ জুড়ে ছুটত।

এই প্রেমের ফুলটি দিতে চেয়েছিলাম তাকে—
সে নিয়েছিল কি না,
আজও রহস্যের মতন লুকানো থাকে বাতাসে।
সে আজ বহু দূরে—
তবু ফুলটি এখনো ফুটে আছে
মৃত্যুঞ্জয়ীর মতন, নির্ভীক উষ্ণ ভালবাসায় ভাসে।

একদিন হয়তো ঝরে পড়বে ফুল,
হয়তো মুছে যাবে পৃথিবীর মাটি ছুঁয়ে—
তবু সুবাসটা রয়ে যাবে
তার নামের স্মৃতিতে,
চিরন্তন প্রেমের প্রতিটি নি:শ্বাসে,
বিরহের কাঁপা বুকে,
অশ্রুর নীরব ঢেউয়ে।

এই প্রেম— কলি থেকে ফুল,
আর ফুল থেকে চিরস্মরণীয় সুবাসে—
আজও বেঁচে আছে
তোমার নাম লেখা হাওয়ায়,
আমার অশান্ত হৃদয়ের প্রতিটি স্পন্দনে।
---------------------------------------------------


২৬-১১-২০২৫

রাজনীতির ভণ্ডামী

 রাজনীতির ভণ্ডামী

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
************************************

দেখ, দেখ, দিকে দিকে ছড়িয়েছে ভণ্ডামী,
রাজনীতির মঞ্চে মঞ্চে আজ শয়তান নামি।
ছদ্মবেশী নেতা, সুন্নাতি পোশাকে মোড়া,
ওয়াজে দেয় তফসির, অথচ মিথ্যা তোড়া।

মসজিদের পথে কখনো পা রাখেনি,
নামাজ পড়া মনে নেই, মুখ ভরলে কথার ত্রুটি।
হক কথা কখনো বলেনি,
ভোটের লোভে লেপে রাখে মুখোশে অন্তর তার চুপি।

মঞ্চে নাটক, অভিনয়, সবই খালি কাগজে,
মিথ্যে বয়ান, মিথ্যে আশ্বাস, জনতার চোখে ধূসর ধোঁয়া।
ভোট আসলেই সে ছদ্মবেশে ধরা দেয়,
কী দরকার, বল, এত অভিনয়ের খেলা?

জনতা দেখে, বুঝে, আর বিশ্বাসে না,
ভোটের মঞ্চে নয়, চরিত্রই সত্যের ল্যাম্প।
রাজনীতির ভণ্ড, ছদ্মবেশী, মিথ্যাবাদী,
অভিনয়ের অজস্র খেলা, অন্ধকারের ছায়া।

নিজের চরিত্রে থাকলেই শ্রেয়,
ভোটের লোভে নাটক কেন, মুখোশে আড়াই হেসে?
দুনিয়ার নজর এড়াতে পারেনি কেউ,
ভণ্ডামীর মুখোশ ফেটে যায় সত্যের ঝড়েতে।
----------------------------------------------


২৬-১১-২০২৫

চারিদিকে শত্রু

 চারিদিকে শত্রু

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট, কাপাসিয়া,গাজীপুর
**********************************
জাগো হে, জাগো বাঙালি!
চেয়ে দেখা আবার এসেছে ফিরে,
সেই পুরানো শত্রু—
যে ধ্বংস করেছিল হৃদয়,
যে চেপে ধরেছিল গলাগুলো স্বাধীনতার।

শকুনের ডানা মেলে
মাতৃকার প্রান্তরে,
স্বাধীন পতাকা আজ রক্তাক্ত,
রক্তে রঙিন, তবু না মরুক আশা।

জাগো হে, জাগো!
চারিদিকে শত্রুর মেলা,
যে সত্য বললেই আসে অত্যাচার,
যে প্রতিবাদ করলেই ভাঙে জেলরুমের দরজা,
দোসরের তকমা খাপ খায় মুখে,
কবির কলম স্তব্দ,
সাংবাদিক নিশ্চুপ,
বিশ্লেষক পক্ষপাতী,
রাজনীতিবিদ হিংসার মহড়া।

অপমান আর অপদস্তের খেলা,
একেকজন অন্যেক ধ্বংসের পায়তারা,
গালি গালাজে তৃষ্ণার্ত,
ইতিহাস কিবৃতির মহউৎসব।

মুক্তিযোদ্ধাদের পদধূলি,
বাঙালি সংস্কৃতির মৃত্যু সন্নিকটে,
দেশবিরোধী উত্থান,
উগ্রবাদের ছাপ,
দিকের দিকে শত্রুর মহড়া।

হে বাঙালি!
তুমি যদি না জাগো,
তুমি যদি না প্রতিবাদ করো,
তাহলে স্বাধীনতার রক্তমাখা পতাকা
মাটির সঙ্গে মিলিয়ে যাবে,
তোমার বুকের মধ্যে শত্রুর চিত্র হোক না ম্লান।

জাগো!
উঠো!
কলম, কণ্ঠ, হাত—
সব শক্তি মিলিয়ে ধ্বংস করো শত্রুর ছায়া,
স্বাধীন মাতৃকার বুকে ছড়িয়ে দাও
নব জাগরণ, নব বিদ্রোহ,
নব বিপ্লবের বাতাস।
----------------------------------------


২৬-১১-২০২৫

আমি বাংলার বজ্র-চিৎকার

 আমি বাংলার বজ্র-চিৎকার

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
***********************************************

আমি বাংলার বজ্র-চিৎকার—
আমি বিদ্রোহী রণচণ্ডী, অগ্নি-শিখা বিক্রম!
অন্যায়ের মন্দিরে আজ আমি
ধূমকেতু হয়ে পতন-ঘণ্টা বাজাই রণমুখর!

হে শাসকচক্র!
শুনো আমার কণ্ঠের ঝড়,
আমার রক্তের আগুনে জ্বলে ওঠে
সত্যের সিংহবাহিনী!
তোমাদের মিথ্যার দেয়াল আজ
মরুভূমির খড়ের ঘর—
এক চোটে ভেঙে দেব,
এক নিশ্বাসে উড়িয়ে দেব
অযাচার, জুলুম, দুঃশাসনের কালো লেলিহান!

আমি সেই জাতির সন্তান—
যারা রক্ত দিয়ে লিখেছে স্বাধীনতার গীত,
যাদের পায়ের চিহ্নেই শুরু হয় বিপ্লবের পথ।
একাত্তরের ধূপ-অগ্নি
আজো আমার মজ্জায় বজ্র হয়ে ওঠে—
দিয়ে যায় নতুন যুদ্ধের ডাক,
নতুন বিদ্রোহের তূর্যধ্বনি!

আমি বাংলার বজ্র-চিৎকার—
আমি বলি,
জনতাই আল্লাহ্‌র আমানত—
জনতাই রাষ্ট্রের শাসকের নির্মান
তোমরা কে?
শাসক?
না—
জনতার পরিশ্রমে গড়া
এক টুকরো সেবকের চাকরি মাত্র!
মুকুট পড়ে থাক,
সিংহাসন ঝলমল করুক—
জনতার একটিমাত্র গর্জনেই
সব ভস্ম হয়ে যাবে!

আমরা দাস নই—
ওরা ভাবুক!
লাঠি–গুলি–হুলিয়া?
হুঁহ্!
আমরা যে মৃত্যুকে নিয়ে খেলি
আনন্দনৃত্য করে—
আমরা অগ্নিপথের যাত্রী,
শৃঙ্খল ভাঙা আমাদের জন্ম-সংস্কার!

আমরা চাই ন্যায়ের অধিকার—
আর সে অধিকার নিতে জানি
সিংহের মতো ক্ষুধার্ত শক্তিতে।
ফ্যাসিবাদের দানব মুখোশ,
স্বৈরতন্ত্রের গলিত জোয়ার,
দুর্নীতির কাঁটার জঙ্গল—
সবকিছুকে আজ জনতার
বজ্র-মুষ্টি মাড়িয়ে দেবে ধূলায়!

এই বাংলাদেশ—
মানুষের মাটি,
মানবতার রক্তে ধোয়া সভ্যতার সূর্যোদয়।
এখানে হিন্দু–বৌদ্ধ–খ্রিষ্টান–মুসলিম
একই ধ্বনিতে গায়—
“মানুষ বড়, ধর্ম তার পথ!”
ধর্মান্ধতার অন্ধ-জ্বালা
আজই নেভে যাক আমার বজ্র-ডাকে!

আমি বাংলার বজ্র-চিৎকার—
আমি জাগাই মৃত হৃদয়,
ভাঙি কালো রাতের কারাগার,
আমি বিদ্রোহী–আমি মুক্তি–আমি জনতার জয়ধ্বনি!

আজ আমি শপথ করি—
চুরি-জুলুম-শোষণের প্রতিটি পর্বত
বজ্রাঘাতে করি চূর্ণ!
সত্য-স্বাধীনতা-মানবতার
নতুন প্রভাত ছিনিয়ে আনি!

আমি বাংলার বজ্র-চিৎকার—
গর্জে উঠি আবার,
জাগাই যুগের বুকে বিদ্রোহের আগুন,
বলেই যাই—
“আমি জনতা—আমি বিদ্রোহ—
আমি বাংলার অমর বজ্র-চিৎকার।
আমি—
বিদ্রোহ, দীপ্তি, বজ্র, অগ্নি,
আমি বাংলার চূড়ান্ত বিপ্লবী চিৎকার!
---------------------------------------
------------------------------------------


২৬-১১-২০২৫

নব স্বপ্নের যাত্রায়

 নব স্বপ্নের যাত্রায়

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
****************************************

যুদ্ধের পর যুদ্ধ ডিঙিয়ে, কত প্রভাত পেরিয়ে,
আজ রাওনাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উঠোনে
পঞ্চম শ্রেণীর শিশুরা দাঁড়ায়—
অশ্রুতে ভেজা চোখে, ভবিষ্যতের দুয়ারে কাঁপে তাদের কণ্ঠ।

বিদায়ের এই করুন বেদনা—
মনে হয় যেন আকাশ ভেঙে হু হু করে পড়ে,
শিশুরা বুক চেপে ধরে রাখে
শেষ বই-গন্ধ, শেষ সুরেলা হাসির প্রতিধ্বনি,
শেষবারের মতো দৌড়ে আসা বেঞ্চের ছায়া।

শিক্ষক—মায়ের মতো, বাবার মতো—
দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁদের পাশে,
হারুন আর রশিদ মোল্লা, শফিকুর রহমান মোল্লা, সোলাইমান মোল্লা,
ইব্রাহীম, আর শ্রদ্ধেয় মাসুম সরকার—
শিক্ষানুরাগের দীপ হাতে মশালবাহীর মতো।

তারা বলেন—
“এই বিদায় তো শেষ নয়, এত তো নব যুদ্ধের সূর্যোদয়।”
শিশুরা বোঝে না,
তাদের অবুঝ চোখ জলে ভিজে উঠে,
কিন্তু এ জলের ভেতরে লুকিয়ে থাকে
ভবিষ্যতের প্রভাতী রোদ,
নতুন পথের প্রথম আলো।

আজ যে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে—
তা পরাজয়ের নয়,
এ তো শক্তি সঞ্চয়ের শপথজল,
নিজেকে নতুন করে গড়ার দৃঢ় উচ্চারণ।

উঠোনের বাতাসেও আজ কাঁপে—
ছোট ছোট হৃদয়ের বিদায়-গান,
তবু তার মাঝেই বেজে ওঠে ভবিষ্যতের গান—
“হে শিশু, চল এগিয়ে যাও, তোমার পথই তোমার আগামীর মান।”

বিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে
ঝরেপড়া অশ্রু যেন লিখে দেয় এক স্বপ্ন-ঘোষণাপত্র—
আগামী দিনের যোদ্ধারা আজ যাত্রা শুরু করলো
নিজেদের নতুন সূর্যের দিকে,
নতুন সংগ্রামের মাঠে,
নতুন বিশ্বাসের দীপ্ত ছন্দে।

তাই আজকের এই বিদায়—
মূহূর্তের নয়, ইতিহাসের।
এই ব্যথা—শোক নয়, শক্তি।
এই অশ্রু—হতাশার নয়, নব স্বপ্নের যাত্রার প্রথম ধারা।

শুভ যাত্রা, প্রিয় শিক্ষার্থীরা—
তোমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে
উজ্জ্বল হোক আগামী দিনের সূর্য।
বিদায় তো নয়—
এ তো আগামী সূর্যের স্বপ্নযাত্রার
প্রথম পদক্ষেপ।

-----------------------------------------------------


২৬-১১-২০২৫

Tuesday, November 25, 2025

জনতার বিপ্লব

 জনতার বিপ্লব

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
***********************************

হে শাসনচক্র, শোনো আজ জনতার বজ্রধ্বনি—
অন্যায়, জুলুম, ফ্যাসিবাদের আগুনে আর ভয় নেই কোনোক্ষণই।
জনতার রক্তে জন্ম নেয় যে দীপ্তি,
সে দীপ্তির সামনে পতনের নেশায় কাঁপে সকল স্বৈরশক্তি।

জনতা যখন জেগে উঠে,
ইতিহাস বদলায় পথের মোড়ে মোড়ে—
সাধারণ মানুষের মুঠিবদ্ধ হাতেই
লিখে যায় নতুন ভোরের সোনালি গীতরেখা ঘোরে।

কিসের গুলি, মেশিনগান, কারাগার কিংবা হুলিয়া!
দমাতে পেরেছে কাকে, কখন?—
বুক পেতে দাঁড়ানো মানুষের সাহস
ঝড়ের মতো ছিঁড়ে ফেলে দমনের লৌহবরণ।

কেউ হয় শহীদ—রক্তে রাঙায় স্বাধীনতার ভবিষ্যৎ,
কেউ হয় গাজী—অটল, অবিচল, অরুণোদয়ের ঘোষণা।
তবু পথ থামে না, থামে না কোন স্বপ্ন,
জনতার বিপ্লবে জন্ম নেয় নতুন দেশের নির্মাণা।

দুর্নীতিবাজ, জুলুমবাজ, দেশদ্রোহী, মবের শৃঙ্খল—
সবই ভেঙে যায় জনতার একবার উচ্চারণে।
ঐক্যবদ্ধ জনতা যখন দাঁড়ায় দুর্জয়ের মতো,
অসময়ে আলো ফোটে, শিকল ভাঙে, সত্য উঠে বিজয়-বেদনার প্রান্তরে।

জনতাই শক্তি—বিজয়ের অগ্নি-প্রতীক,
জনতাই ইতিহাসের শাসক, সময়ের প্রকৃত দিশারী।
অবশেষে জুলুম পালায়, অন্ধকার গলে যায়—
আর ন্যায়ের পতাকা উড়ে যায়
স্বপ্ন-জাগানো স্বাধীন আস্তাকুঁড়ি থেকে নতুন আকাশের দিকে ভারী।

জনতার বিপ্লব—নতুন ভোরের জাগরণ।
----------------------------------------------------------


২৫-১১-২০২৫

স্বাধীনতা এমনি আসেনি

 স্বাধীনতা এমনি আসেনি

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
********************************************

হে জাতি, শোনো বজ্রধ্বনি!
স্বাধীনতা এমনি এমনি আসে না—
এটি ছিনিয়ে আনতে হয় আগুনে,
ঝড়ের ভিতর দাঁড়িয়ে,
রক্তের নদী পাড়ি দিয়ে,
বুকের শেষ স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়ে!

সেদিনের প্রেক্ষাপট ছিল আগ্নেয়গিরি—
পোড়া মাটির বুকে সন্তানের চিৎকার,
রক্তে রঞ্জিত ধানখেত,
বিধবার কপালের ছাই,
আর অদম্য প্রতিজ্ঞা—
“এই দেশ ছিনিয়ে নেব, নয়তো জীবন দেব!”
সে বিপ্লব ছিল বজ্রপাত,
যা শত্রুর বুকে বিদ্যুৎ হয়ে নেমেছিল।

মনে রেখো হে জাতি—
স্বাধীনতা দয়া নয়, ভিক্ষা নয়,
এটি ইতিহাসের সবচেয়ে দুঃসাহসী ডাক,
কণের পর কণায় লেখা ত্যাগের অগ্নিলিপি।
যারা রক্ত ঝরিয়েছে,
তারা জ্বালিয়ে গেছে শিহরণ—
“জেগে ওঠো! জাগো!
স্বাধীনতা রক্ষা করতে আবার দাঁড়াও!”

তবু আজো অন্ধকার লুকিয়ে আছে কোণে কোণে—
সেই পুরোনো শকুনেরা আবার ডানা মেলে,
বর্ণচোরা গিরগিটি রং বদলায়,
মুখোশ পরে, হাসে, ফুঁসছে অন্তরে পরাজয়ের দাহ নিয়ে।
একবার ভুলে চিনলে—
ঢলে পড়বে সব, ভেঙে পড়বে জাতি,
মুছে যাবে পরিচয়, মৌলিকতা, অস্তিত্ব!

হুঁশিয়ার হে জাতি!
মীরজাফর এখনো আছে—
নতুন নামে, নতুন চামড়ায়,
মুনাফিকেরা রাতের মতো কালো,
বিশ্বাসঘাতকরা ছায়ার মতো পিছু নেয়—
তোমাকে ঘিরে রাখে, অপেক্ষায় থাকে
তোমার একটুখানি ভুলের!

তাই বলি—
জাগো হে জাগো! বজ্রের মতো জাগো!
তোমার রক্তে আগুন ধরাও,
মাটি কাঁপাও তোমার পদধ্বনিতে।
আরো তীব্র, আরো প্রবল বিদ্রোহে
তুলে ধরো মুষ্টি আকাশে—

স্বাধীনতা এমনি এমনি আসেনি,
এবারও এমনি থাকবে না!
রক্ষা করতে হলে বজ্র হও,
অগ্নি হও, বিদ্রোহী হও!
শত্রুকে চিনো, প্রতিরোধ গড়ো,
জাতিকে জাগাও, মাটিকে জাগাও!

হে জাতি—
তুমি জেগে উঠলেই
স্বাধীনতা অটুট থাকবে,
তুমি ঘুমোলেই
অবনতি নিশ্চিত!

তাই আজই শপথ নাও—
জাগব, রক্ষা করব, লড়ব!


রক্ত-ঝরা বাংলাদেশ

 রক্ত-ঝরা বাংলাদেশ

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
****************************************************

একাত্তুরের আগ্নেয়-জন্ম, হে বাংলাদেশ—
তোমার শিরায় শিরায় আজো আগুন, আজো বজ্র, আজো বিদ্রোহের শপথ।
তুমি নদীর মতো কোমল নও—
তুমি বজ্রপাতের সন্তান,
তুমি অগ্নিপাহাড়ের গর্জন,
তুমি রক্ত-ধারায় লিখে যাওয়া ইতিহাসের অমোঘ মহাধ্বনি!

যে দানবেরা একদিন চেয়েছিল তোমার কণ্ঠ ছিন্ন করতে,
ভাষা কেড়ে নিতে, স্বাধীনতা মুচড়ে ভেঙে ফেলতে—
তাদের অস্থিমজ্জা পর্যন্ত থরথর করে আজো
যখন শোনা যায়
বাঙালির বুকফাটা গর্জন— "স্বাধীনতা মানে অধিকার!"

লক্ষ শহীদের রক্ত—
এটা শুধু রঙ নয়, এটা তাণ্ডবের সংজ্ঞা!
লক্ষ মায়ের অশ্রু—
এটা শুধু ব্যথা নয়, এটা বিপ্লবের আগুন-ঘৃণা!
এই রক্তে, এই অশ্রুতে, এই আগুনে
বাংলাদেশের পতাকা শুধু উড়ে না—
পৃথিবীকে জ্বালিয়ে দিয়ে ওঠে দাঁড়ায় সত্যের মশাল হয়ে!

তবু দেখো—
জুলুম শেষ হয়নি, স্বাধীনতা পুরোপুরি আসেনি,
গণতন্ত্রের বুক চাপা পড়ে আছে অশুভ পায়ের তলায়।
দুর্নীতির পিচ্ছিল সাপেরা ছুটে বেড়ায় মন্ত্রীসভা থেকে মহল্লা পর্যন্ত,
সাম্প্রদায়িক বিষণ্ণতা ও উন্মাদনার দহন
মানুষকে ছিন্নভিন্ন করে,
প্রতিহিংসার কালো ছায়া দমবন্ধ করে
জনতার কণ্ঠকে।

কিন্তু—
এই মাটিতে দীর্ঘশ্বাস বেশিক্ষণ টিকে থাকে না।
এই মাটিতে কষ্ট জমে থাকলে
তার নিচে গোপনে জ্বলে আগুন—
এ আগুন পুড়লে শুধু গাছ নয়,
সিংহাসনও গলে যায়!!

হে বাংলাদেশ, তুমি নরম নও—
তুমি এমন গর্জন,
যার শব্দে পাহাড় থরথর করে,
নদী উন্মাদ হয়ে ওঠে,
আকাশ বিদ্যুৎ হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভূমীর বুকে!

তোমার রক্তঝরা ইতিহাসে লেখা—
“অন্যায়কে ক্ষমা নয়, প্রতিরোধ!
জুলুমকে সহ্য নয়, বিদ্রোহ!”

আজো সেই রক্ত ঘুমায় না,
আজো সেই আগুন নেভে না—
শোষিতের বুকের নীরব ক্রোধ আজ এক অগ্নিঝড়,
যে ঝড়ে উড়ে যাবে
স্বৈরশাসনের শেষ চিহ্ন,
ধ্বংস হবে দুর্নীতির অট্টালিকা,
ভেঙে পড়বে প্রতিহিংসার খাঁচা,
সত্য দাঁড়াবে অগ্নিমূর্তি হয়ে!

এসো জনতা—
তোমার হাতই বিপ্লব, তোমার কণ্ঠই বজ্র,
তোমার রক্তই স্বাধীনতার শেষ ইশতেহার।
গর্জে ওঠো!
শুনিয়ে দাও পৃথিবীকে—

বাংলাদেশ কোনোদিন মাথা নোয়াবে না,
বাংলাদেশ কোনোদিন পরাজিত হবে না,
বাংলাদেশ জনতার—
এবং জনতার রক্তের আগুনেই নতুন স্বাধীনতা জন্ম নেবে!
---------------------------------------------------


২৫-১১-২০২৫

রক্ত-ঝরা বাংলাদেশ

 রক্ত-ঝরা বাংলাদেশ

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
****************************************************

একাত্তুরের আগ্নেয়-জন্ম, হে বাংলাদেশ—
তোমার শিরায় শিরায় আজো আগুন, আজো বজ্র, আজো বিদ্রোহের শপথ।
তুমি নদীর মতো কোমল নও—
তুমি বজ্রপাতের সন্তান,
তুমি অগ্নিপাহাড়ের গর্জন,
তুমি রক্ত-ধারায় লিখে যাওয়া ইতিহাসের অমোঘ মহাধ্বনি!

যে দানবেরা একদিন চেয়েছিল তোমার কণ্ঠ ছিন্ন করতে,
ভাষা কেড়ে নিতে, স্বাধীনতা মুচড়ে ভেঙে ফেলতে—
তাদের অস্থিমজ্জা পর্যন্ত থরথর করে আজো
যখন শোনা যায়
বাঙালির বুকফাটা গর্জন— "স্বাধীনতা মানে অধিকার!"

লক্ষ শহীদের রক্ত—
এটা শুধু রঙ নয়, এটা তাণ্ডবের সংজ্ঞা!
লক্ষ মায়ের অশ্রু—
এটা শুধু ব্যথা নয়, এটা বিপ্লবের আগুন-ঘৃণা!
এই রক্তে, এই অশ্রুতে, এই আগুনে
বাংলাদেশের পতাকা শুধু উড়ে না—
পৃথিবীকে জ্বালিয়ে দিয়ে ওঠে দাঁড়ায় সত্যের মশাল হয়ে!

তবু দেখো—
জুলুম শেষ হয়নি, স্বাধীনতা পুরোপুরি আসেনি,
গণতন্ত্রের বুক চাপা পড়ে আছে অশুভ পায়ের তলায়।
দুর্নীতির পিচ্ছিল সাপেরা ছুটে বেড়ায় মন্ত্রীসভা থেকে মহল্লা পর্যন্ত,
সাম্প্রদায়িক বিষণ্ণতা ও উন্মাদনার দহন
মানুষকে ছিন্নভিন্ন করে,
প্রতিহিংসার কালো ছায়া দমবন্ধ করে
জনতার কণ্ঠকে।

কিন্তু—
এই মাটিতে দীর্ঘশ্বাস বেশিক্ষণ টিকে থাকে না।
এই মাটিতে কষ্ট জমে থাকলে
তার নিচে গোপনে জ্বলে আগুন—
এ আগুন পুড়লে শুধু গাছ নয়,
সিংহাসনও গলে যায়!!

হে বাংলাদেশ, তুমি নরম নও—
তুমি এমন গর্জন,
যার শব্দে পাহাড় থরথর করে,
নদী উন্মাদ হয়ে ওঠে,
আকাশ বিদ্যুৎ হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভূমীর বুকে!

তোমার রক্তঝরা ইতিহাসে লেখা—
“অন্যায়কে ক্ষমা নয়, প্রতিরোধ!
জুলুমকে সহ্য নয়, বিদ্রোহ!”

আজো সেই রক্ত ঘুমায় না,
আজো সেই আগুন নেভে না—
শোষিতের বুকের নীরব ক্রোধ আজ এক অগ্নিঝড়,
যে ঝড়ে উড়ে যাবে
স্বৈরশাসনের শেষ চিহ্ন,
ধ্বংস হবে দুর্নীতির অট্টালিকা,
ভেঙে পড়বে প্রতিহিংসার খাঁচা,
সত্য দাঁড়াবে অগ্নিমূর্তি হয়ে!

এসো জনতা—
তোমার হাতই বিপ্লব, তোমার কণ্ঠই বজ্র,
তোমার রক্তই স্বাধীনতার শেষ ইশতেহার।
গর্জে ওঠো!
শুনিয়ে দাও পৃথিবীকে—

বাংলাদেশ কোনোদিন মাথা নোয়াবে না,
বাংলাদেশ কোনোদিন পরাজিত হবে না,
বাংলাদেশ জনতার—
এবং জনতার রক্তের আগুনেই নতুন স্বাধীনতা জন্ম নেবে!
---------------------------------------------------


২৫-১১-২০২৫

আর কত দূরে তুমি?

 আর কত দূরে তুমি?

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
***************************************
শুনো হে পৃথিবী—
এ শুধু প্রেম নয়,
এ আমার নিঃশ্বাসে লাগানো অগ্নি,
হৃদয়ের গভীরে গোপনে জ্বলা
অদেখা কোনো অনল।
শিরা-উপশিরায় তার ঢেউ,
রাত্রির নিস্তব্ধতায় বজ্রের মতো ধ্বনি—
আমি শুনি, কেউ শুনতে চায় না।
অস্থি-মজ্জায় এক ঝড়,
নিয়তির মতো নিরন্তর বয়ে যায়।
তবু সে অধরা—
হঠাৎ মনে হয় ঠিক পাশেই,
ঠিক চোখের কোণে,
ঠিক স্পর্শের দূরত্বে,
তবু ছুঁই ছুঁই ভেবে হাত বাড়ালে
মেঘের মতো মিলিয়ে যায়।
তুমি কে?
প্রশ্নটি আজো আমার বুকে ঝুলে আছে—
তালের পাতায় জমে থাকা শিশিরের মতো,
ঝরে পড়ে না, শুকিয়েও যায় না।
হৃদয়ের গভীর খাঁজে তুমি এক অনুভূতির লুকানো ব্যথা,
যা কেউ বোঝার চেষ্টা করল না কখনো।
এই শুন্যতা—
হাঁসফাঁস করা এক দূরত্ব,
যার রেখায় আমি প্রতিদিন হারাই।
তোমাকে দিয়েছিলাম এক স্বর্গীয় প্রেম,
জানতাম না, প্রেমও কখনো
এমন দীর্ঘ পথ ধরে হাঁটে।
বলো তো, আর কত দূরে তুমি?
আকাশের ওপাশে?
নাকি আমার ভেতরের কোনো অনাবিষ্কৃত গহিনে?
যেখানে শব্দ থেমে যায়,
কিন্তু তোমার নাম থামে না…
যদি জানতে,
এ হৃদয়ে আজও তুমি ঢেউ তোল,
তাহলে কি ফিরে আসতে?
নাকি দূরত্বই তোমার সত্যিকারের ঘর—
আর আমার প্রশ্নই শুধু
অসমাপ্ত কবিতার শেষ লাইন?
বলতো…
আর কত দূরে তুমি?
--------------------------------------------------
২৫-১১-২০২৫

অভিশপ্ত নেতা

 অভিশপ্ত নেতা

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
***************************************

দিকে দিকে ছায়া, শির উঁচু নেতার,
জনতার চোখে ভয়, হৃদয়ে অভিশাপের ঘা।
হাত গিলে লুট, ধ্বংসে ভরা চিত্ত,
মানবতার পথে তাদের অন্ধকারের ঘা।

মীরজাফর, মুনাফিক, বিশ্বাসঘাতকরা,
অভিশপ্ত কায়মান্দ—জনতার অভিশাপ ভারি।
সাম্প্রদায়িক, উগ্র, দেশদ্রোহী,
অর্থপাচারী, লুটেরাজ—সবই তাদের দারি।

ওরা স্বাধীনতার শত্রু, তাবেদার,
মববাদীর প্রশ্রয়, সন্ত্রাসে পূর্ণ।
জনতা চাপে, ঘুম ভেঙে,
আগুন জ্বালায়, হোক প্রলয়, হোক ঝড়পূর্ণ।

ধ্বংস হউক দুষ্টদের, কায়মান্দের দলে,
উঠুক জনতার প্রতিরোধের ঢেউ।
বিপ্লবের শঙ্খ বাজুক শহর-গঞ্জে,
অন্ধকার ছিন্ন হোক, আলো আসুক স্বপ্নে।

আজকের দুঃশাসকরা হোক ইতিহাসে,
জনতার অভিশাপ হোক প্রতিটি ধ্বনিতে।
বিদ্রোহের বাণী বয়ে উঠুক বাতাসে,
ভোরের আলো হোক দুষ্কৃতির শাস্তিতে।

মানবতার পথে জাগুক মুক্তির জোয়ার,
অভিশপ্ত নেতাদের প্রলয় হোক নিশ্চিত।
জনতার রক্তে লিখিত হোক নতুন অধ্যায়,
স্বাধীনতার পতাকা উড়ুক উঁচু আকাশে।
------------------------------------------------


২৫-১১-২০২৫