Monday, November 24, 2025

ইতিহাসে শকুনের চোখ

 ইতিহাসে শকুনের চোখ

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*****************************************

ইতিহাসের মাথায় আজ শকুন বসে টুপি পরে,
যেন বিদ্বান–বাবু, চোখে তার গোল চশমা ঝরে।
পাতা উল্টায় গুরুগম্ভীর, মুখে হালকা বিরহ সুর,
বলতে থাকে—“এই দেশ তো ভুলেই চলে বছর–দু’চার দূর!”

যে রক্ত দিয়ে লেখা হলো ভাষার প্রথম দৃপ্ত নাম,
শকুন বলে—“তা ভালো, তবে একটু সংশোধন করা থাম!”
মুক্তিযুদ্ধের পাতায় গিয়ে খুঁজে আনে অন্য পথ,
“এটা নাকি অতিরঞ্জন!”—মনে মনে হাসে ফোঁস–ফোঁস শ্বস।

বইয়ের ভেতর ফেলে রাখে বাকা অক্ষর, হালকা জ্বালা,
কথা বদলে দেশে বানায় নতুন কিছু “আধুনিক” কাণ্ডকারখানা।
শহীদের ছবি ঘেঁটে দেখে—“এ তো খুবই দার্শনিক!”,
তারপর নিচে লেখে দেয়—“উনি তো ছিলেন নিয়মিত সন্দেহভাজন লোক!”

রাজাকারকে বানায় সাধু—“বেশ ভালো মানুষ ছিলেন, শুনেছি”,
যে অপরাধ দিনের মতো স্পষ্ট—তা হয় “তথ্য ভুল, দুঃখিত।”
বীরের গায়ে কালো কালি মেখে বলে—“এটা গবেষণা, বোঝো কি?”,
যে গবেষণা শুনলে সাধারণ মানুষ হাসে—“এ আবার কি বুদ্ধি!”

জাতির স্মৃতি নিয়ে এমন খেলা—এ যেন শিশুর লুডো–খেলা,
সত্যকে রেখে কোণে, মিথ্যার গায়ে মেখে দেয় মধুর মেলা।
প্রজন্ম যদি জিজ্ঞেস করে—“সত্য কোনটি? কে বুঝিয়ে দেবে?”
শকুন হাসে ঝুপঝুপ করে—“সত্য তো অনেক, বাছা! কোনটা নেবে?”

কিন্তু সত্যেরও থাকে জেদ—বালুচরে লুকোয় না সে,
একদিন হাওয়ার সাথে উঠে দাঁড়ায় দৃপ্ত, নতুন বেশে।
মিথ্যার মুখোশ খুলে পড়ে—ধপাস ছিটকে দূর–কোনে,
ইতিহাস তখন বলে উঠে—“চেনা চেহারা ফিরিয়ে দে, সোনা!”

শকুনেরা যতই নখ বসাক—আলোর পথে ফেরে দিন,
কলম যখন জ্বলে ওঠে, মুছে যায় সমস্ত মিথ্যাচার–চিন।
বেঁচে থাকবে সত্যই শুধু—রবে চিরকাল অমলিন,
ইতিহাসের চোখে তখন দেবে আলো নতুন প্রজন্ম–বীণ।
------------------------------------------------------

No comments:

Post a Comment