Thursday, November 20, 2025

কাপাসিয়ার কাঁঠালের গান

 কাপাসিয়ার কাঁঠালের গান

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
****************************************

সবুজ শ্যামলে কাপাসিয়ার মাঠ,
লাল কাঁঠালের ঝুড়ি ঝরে ঝরে রসের আভাস রাত।
দূর-দূরান্ত থেকে আসে পাইকারেরা,
হাত ভরা কাঁঠাল, মুখে হাসি, চোখে জ্বলে ধারা।

বারিষাবের খেতে ঘ্রাণ মিষ্টির ঝড়,
খিরাটীর সোনালি রোদে নেচে ওঠে জমি-খড়।
খোদাদিয়ার বাগানে লাল কাঁঠালের ঝিলিক,
বরুনের মাঠে ফোটে শিশুর হাসি, কৃষকের ঘামে ভরা কোণিক।

কান্দানিয়া, চাঁদপুর, কামড়া মাশকের বাগান,
ফুলে ওঠে উৎসব, বাজে সোনার গান।
ঘাটকুড়ি, রাওনাট, ভূবনেরচালা—প্রতিটি গ্রামে,
মাঠের কাঁঠাল যেন মুক্তির স্বপ্নে ভরা প্রান্তর তানে।

জামিরারচর, সূর্য্যনারায়ণপুর, পাবুর বাগানে,
প্রতিটি গাছে ঝরে রস, ঘ্রাণে ভরা হাসির ধ্বনি।
রাউৎকোনা, কাজাহাজী, চাকৈল, বড়জোনায়,
মৌসুম এলেই মাঠ-ঘাটে ভরে ওঠে আনন্দের ঢেউ।

দুর্গাপুর, তরগাঁও, নবীপুর, বাঘিয়ায়,
পাইকারেরা আসে খুঁজতে মিষ্টি কাঁঠাল ঘরে।
মৈশন, উত্তরখামের, সোনারুয়া, পিরিজপুরে,
উঁচু মাটিতে চারা রোপণ করলে ফলন হয় দীর্ঘকাল ধরে।

বেগুনহাটি, কড়িহাতা, কাপাসিয়া, সিংহশ্রী, রায়েদ,
প্রতিটি বাগান যেন জীবন ও বিদ্রোহের খনি।
দরদরিয়া, চৌরাপাড়া, বড়হর, বাগেরহাটে,
কৃষকের ঘাম, হাসি, পরিশ্রম—কাঁঠালের ঘ্রাণে ভেসে।

ভুলেশ্বর, বেলাশী, কপালেশ্বর, গিয়াসপুর, বারাব,
উৎসবের ধ্বনি বাজে বাজারে, কাঁঠালের আনন্দে ভরা।
উজলী, কির্ত্তুনিয়া, গাওরার, ভেরারচালা,
ছাতির বাজার, টোক, সনমানিয়া—সব মিলিয়ে উৎসবের ঝড়।

রাওনাটের বাগানে ঝরে মিষ্টি রসের ঝিলিক,
কৃষকের মুখে হাসি, মাঠে ভরে আনন্দের মিলিক।
শ্রীপুরের বাজারে ভিড় জমে ঢেউ,
জিআই স্বীকৃত কাঁঠাল ছড়িয়ে দেয় খ্যাতি দেশে-বিদেশে।

নগরহাওলা, চকপাড়া, টেপিরবাড়ি, রাজাবাড়ি,
ছাতির, চন্নাপাড়া, কেওয়া—বাজারে ধন, খুশির ফোয়ারি।
ট্রাকে ট্রাকে যায় দেশের কোণে কোণে,
পাইকারের খুশি, কৃষকের পরিশ্রমের সোনার সোনে।

খাজা, গালা, দুরসা—প্রকারে ভিন্ন,
মিষ্টির স্বাদে মেলে মানুষের মনে শোভা অনন্য।
কাঁঠালের কাঠে বানানো আসবাব, ঘরে ঘরে পিঠার স্রোত,
মাটির ঘ্রাণে ভরা প্রতিটি কাঁঠাল, কৃষকের হাসির কোদ।

মৌসুমের দিনগুলো ভরে হাসি আর গান,
প্রতিটি বাজারে আনন্দের বাঁধ ভাঙে ধান।
পাইকারেরা ছুটে আসে, ক্রেতারা আনন্দিত,
প্রতিটি কাঁঠাল বাগান, গ্রামীণ জীবনের প্রণীত।

শ্রীপুর, কাপাসিয়া, রাওনাট—সব গ্রামে,
কাঁঠালের ঘ্রাণে ভরে ওঠে প্রাণের ধামে।
হিমাগার হোক, নীতি হোক, প্রশিক্ষণ হোক সঠিক,
কাঁঠাল হোক দেশের শক্তি, ভবিষ্যতের দিশা নির্মিত।

সবুজ শ্যামলে কাপাসিয়া গ্রাম,
কাঁঠালের ঘ্রাণে মেলে জীবন-ধারার ধাম।
কৃষকের পরিশ্রম, গ্রামের হাসি, বাগানের কাঁঠাল,
মাটির দানে ভরে ওঠে দেশের সুখ-স্মৃতির পাল।

বিদেশেও রপ্তানি হয়—কাপাসিয়ার কাঁঠাল, গৌরবের মালা।


২০-১১-২০২৫

No comments:

Post a Comment