লেখা আছে অশ্রুজলে
কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
********************************************
রাত্রি ছিল ঘন, ধরণী যেন স্থির,
আকাশে নিঃশব্দ ক্রন্দন— দীর্ণ গগন-বীণা।
ঢাকা-কারাগার— প্রাচীরবন্দিনী ইতিহাস,
যেথা চার দীপ্ত আত্মা বসে নীরব ধ্যানধারায়।
অন্ধকারে ভাসে মৃদু প্রার্থনা—
“হে পরম প্রভু, তব নামে করি সমর্পণ!”
রুদ্ধ নিঃশ্বাসে চঞ্চল বাতাস,
স্রোতবেগে ছুটে আসে মৃত্যুর রথ।
তাজউদ্দীনের তেজে কম্পে লৌহদ্বার,
স্যার সৈয়দ নজরুলের উচ্চনয়ন প্রভায় ঝলকায় সাহস,
মনসুরের হৃদয় — ধর্মের প্রতীক,
কামারুজ্জামান — ধ্যানমগ্ন তপোবন-বনপ্রাণ।
তবু!
হায়! হঠাৎ গর্জে উঠে কালপ্রহর,
বন্দুকের বজ্রনাদে ছিন্ন হলো প্রাণের মালা।
বেয়নেটের ক্ষুরধার ঝিলিকে— রক্ত-অরুণ দীপ,
ভিজিল ভূমি, কম্পিল আকাশ, নীরব হ’ল প্রহরীও।
সে রাত্রি— যেন প্রলয়ের অরুণোদয়,
দিগন্তে বয়ে যায় রক্তস্রোত-সঙ্গীত।
বাংলার মাটি সে রক্ত পান করে বলল—
“ওরে আমার সন্তান, তোমরা অমর!”
দিগ্দিগন্তে প্রতিধ্বনি তোলে শোকধ্বনি—
“জাগো, জাগো বঙ্গজন, রক্তে লেখা তোমার পথ।”
বাতাসে ভাসে মৃত্যুর গন্ধ, অথচ—
জীবন নবতর হয় আত্মোৎসর্গের পূণ্যতেজে।
হে অনন্ত করুণাময়,
যাদের রক্তে তব ভূমি পেল মুক্তি,
যারা নিঃশেষে উৎসর্গ করিল প্রাণ,
তাদের তুমি দান করো চির-শান্তি, চির-আলো।
হে আল্লাহ্,
চতুর্মহান বীরকে তুমি রাখো
জান্নাতুল ফেরদৌসের উদ্যান-প্রান্তে,
যেথা কল্যাণের নদী বহে, জ্যোত্স্না ঝরে স্নিগ্ধে।
আমীন —
তব করুণা-ছায়ায় থাকুন তারা চিরজাগ্রত,
বাংলার রক্তে, বাংলার রোদে, বাংলার প্রাতে।
---------------------------------------
০৩-১১-২০২৫
No comments:
Post a Comment