সেরা গোলকিপার
কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লারাওনাট, কাপাসিয়া,গাজীপুর
---------------------------------
কাপাসিয়ার দূর্গাপুর গ্রাম, ধানের মাঠে শিশির ভোর,
১৯৫২ সালের ১৮ এপ্রিল, আব্দুল মোতালেবের জন্মের ঘোর।
পিতা আব্দুর রশিদের ঘরে, এলেন তিনি আলোর প্রাণ,
বাংলার মাঠে ফুটবলে গড়লেন গৌরবের মহাকাব্য গান।
১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান যুব দলে খেলেন প্রথমবার,
সকাল ক্লাবের শুরুর পথে জ্বলে ওঠেন অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ধার।
সেই বছরেই রাহমতগঞ্জ এমএফএস-এ শুরু হয় জীবনভর লড়াই,
১৯৬৯ থেকে ১৯৭৯—প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান নির্ভীক যোদ্ধার মতোই।
১৯৭৫-এ বিজেএমসি, নতুন রঙে বাজল বাঁশি,
১৯৮০–১৯৮১ সাধারণ বীমা, লড়াইয়ে আনলেন খুশির হাসি।
আবাহনীর নীল জার্সিতে, ১৯৮২ থেকে ১৯৮৭,
বাংলার আকাশে তার নাম—গোলপোস্টের প্রহরী অদম্য দৃপ্তি।
জাতীয় দলে ডাক আসে ১৯৭৩ সালের মেরদেকা কাপে,
বাংলাদেশের প্রথম ব্যাচে মোতালেব দাঁড়ান সগৌরবে।
১৩ আগস্ট ১৯৭৩, সিঙ্গাপুরের সাথে খেলায় বীর,
পেনাল্টি ঠেকিয়ে গড়েন ইতিহাস—বাংলাদেশ পেল প্রথম ক্লিনশিটের নীর।
১৯৮০–১৯৮৪, নৌবাহিনীর বুকে ছিলেন সৈনিক,
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর দলে অধিনায়ক, সাহসী, দৃপ্ত মনোবল অনিঃশেষ।
তার নেতৃত্বে বাহিনী দল মাঠে ছড়ায় গৌরবের গান,
বাংলার ফুটবল ইতিহাসে তিনি রয়ে গেলেন অম্লান।
তারপর আসে দিল্লির আলো, ১৯৮২ এশিয়ান গেমসের দিন,
বাংলাদেশের অধিনায়ক তিনি, পতাকার তলে দৃঢ় ঋণ।
প্রতিপক্ষ জানে, গোলপোস্ট মানেই অটল এক প্রাচীর,
মোতালেবের সামনে দাঁড়ালে ভয় পায় প্রতিদ্বন্দ্বীর।
খেলোয়াড়ি শেষে কোচের হাল ধরে শেখান তরুণ প্রাণ,
রাহমতগঞ্জে তরুণেরা পায় তার শিক্ষা, সততা আর মহান জ্ঞান।
কিন্তু নিয়তির বাঁশি বেজে ওঠে, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭,
হার্টের আঘাতে নিভে যায় তার আলো, স্তব্ধ হয় মাঠ-গ্যালারি।
তবু আজও মানুষ বলে, মাঠে বাজে তারই নাম,
আব্দুল মোতালেব—স্বদেশের গর্ব, সেরা গোলকিপার, চির অম্লান।
------------------------------------------------
No comments:
Post a Comment