বর্ণাঢ্য জীবন
কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লারাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
********************************
গাজীপুরের কাপাসিয়ার ঘাগটিয়া গ্রামে জন্মলাভ,
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হান্নান শাহ, ইতিহাসে দীপ্তি ছড়াভ।
পিতা ফকির আবদুল মান্নান, ৬৫–৬৮ পাকিস্তানের মন্ত্রী,
ছোট ভাই শাহ আবু নাঈম মোমিনুর, সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিরন্তরী।
১৯৬২ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে কমিশন লাভ,
সেনার জীবনে শুরু হলো পথচলা, দায়িত্বে সাহসের প্রমাণ রাখভ।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বিগ্রেড কমান্ডার, দায়িত্বের মহা চ্যালেঞ্জে,
চট্টগ্রামের মিলিটারি একাডেমির কমান্ডেন্ট, প্রশিক্ষক যশোরে যত্নে।
পাকিস্তানের কোয়েটার আর্মি কলেজে ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল শিক্ষা,
প্রশিক্ষক হান্নান শাহ, জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালানিতে রেখেছেন মেধার রেখা।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ঘটে ইতিহাসের ছেদ,
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত, রাঙ্গুনিয়া থেকে ঢাকায় মরদেহে পৌঁছান।
এইচ এম এরশাদ সরকার সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দিলে,
তবু সরকারের সংস্থাপন মন্ত্রণালয় যুগ্ম সচিব ও বিএডিসি চেয়ারম্যান হিসেবেও কাজ মিলে।
১৯৮৩ সালে বিএডিসি চেয়ারম্যান পদ ত্যাগ, বিএনপিতে যোগ দেন আনুষ্ঠানিক,
মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, সাংগঠনিক সম্পাদক, উপদেষ্টা পরিষদে অবিরাম।
১/১১’র কঠিন সময়ে খালেদা জিয়ার পাশে, বিএনপির তৃণমূল সংগঠন চালান,
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সাহসী কণ্ঠে বলান।
২০০৯ সালে পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন,
ষষ্ঠ কাউন্সিলেও পুনর্নির্বাচিত, দলের সর্বোচ্চ ফোরামে দায়িত্ব পালন।
১৯৯১ সালে গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত,
খালেদা জিয়ার সরকারের পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী, দেশপ্রেমে অমিত।
স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে, কারাগারের অভিজ্ঞতা বহুবার,
বর্তমান সরকারের আমলেও কিছু মামলায় তিনি সাহসের উদাহরণ প্রমাণ।
প্রতি পদক্ষেপে প্রতিকূলতা, তবু অদম্য সাহসের ছাপ,
প্রতিটি যুদ্ধ, প্রতিটি দায়িত্বে, নিজের পরিচয় রেখেছেন সাপ।
দেশপ্রেমে অমোঘ, ত্যাগের পথে অবিচল, অদম্য শক্তির রেখা,
রাজনীতির মহাজগতেও খুঁজে পাওয়া যায় তাঁর নীতি ও রেখা।
কারাগারের গোধূলিতে দাঁড়িয়ে, সত্যের ডাক দিলেন নির্ভীক,
মুখের হাসিতে লুকিয়ে রাখতেন জনতার স্বপ্ন, হৃদয়ের দীপ্তি অসীম।
শিক্ষা, উন্নয়ন, নাগরিক কল্যাণ—সকল ক্ষেত্রেই রেখেছেন চিহ্ন,
সেতু, রাস্তা, স্কুল, কলেজে লেগেছে তাঁর ছোঁয়া, নিঃস্বার্থ ভ্রূণ।
কাপাসিয়ায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট নির্মাণে হাত রেখেছেন,
ফকির মজনু শাহ সেতু, তাঁর ত্যাগের বড় প্রমাণ হয়ে দৃষ্টান্ত রেখেছেন।
দুই ছেলে, এক কন্যাসন্তান—পরিবারে আশীর্বাদ, জীবন পূর্ণতা পায়,
জাতির কল্যাণে অগণিত কাজের ছাপ, ইতিহাসে চিরচিহ্ন হয়ে যায়।
প্রতি কথায়, প্রতিটি কাজেই ছিলেন মানবতার বাতিঘর,
সাহসিকতা, সততা ও ন্যায়ের পথে তিনি চলেছেন অমলিন চিহ্নর।
দেশপ্রেমে অমোঘ, ন্যায় ও সত্যে অটল, দলের নেতা, জনতার বন্ধু,
হান্নান শাহ, এক জীবনের মহাকাব্য, ইতিহাসে চিরন্তন প্রদর্শক।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬, মঙ্গলবার ভোরে, সিঙ্গাপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ,
মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়, জীবনযাত্রার শেষ ধাপ।
বর্ণাঢ্য জীবন, সাহসিকতা, দেশপ্রেম, রাজনৈতিক নেতৃত্বের অনন্য দ্যুতি,
হান্নান শাহ—চিরস্মৃতির প্রতীক, জাতির হৃদয়ে চিরন্তন কাব্য ধারা।
--------------------------------------------------------------
No comments:
Post a Comment