Friday, September 12, 2025

কাপাসিয়ার প্রথম গ্রাজুয়েট

 কাপাসিয়ার প্রথম গ্রাজুয়েট

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর।
******************************************
উরুন গাঁয়ের ভোরের কুয়াশা ফুঁড়ে, জ্বলল এক নক্ষত্র দীপ,
১৯০৫-এর ডিসেম্বরের উনত্রিশে, সূর্যের মতো হল উদ্ভাসিত।
পিতা আব্দুল হামিদ সারোয়ার, যেন শান্ত বটবৃক্ষ তলে,
মাতৃভূমি পেলেন সন্তান—জ্ঞান-আলোক ঝরল দলে দলে।

কালিগঞ্জের আকাশে প্রথম উড়াল, ১৯২৫-এর ম্যাট্রিক জয়,
যেন বসন্তের কোকিল ডাক, বিদ্যার বনে নতুন রঙ বই।
ফেনীর মহুয়া ফুলে ভোরের শিশির—১৯২৮-এর আই এ পাস,
১৯৩১ এ কলকাতার সাগর পার, শিক্ষার তরী পেল সুবাস।

আটদশ গ্রামের প্রথম গ্রাজুয়েট—গৌরবের সেই ধ্রুবতারা,
লোকজন ভিড় করল ঘরে, যেন পূর্ণিমার আলোয় মধুকারা।
১৯৩৫ এ শিক্ষক হয়ে নওয়াবগঞ্জে, বকুল ফোটার মতো শুরু,
১৯৩৬ এ কাপাসিয়া এম ই স্কুলে প্রধান—গোধূলি রঙের গুরু।

১৯৩৮ এর জানুয়ারির বাইশে দায়িত্বের পূর্ণিমা রাত,
ফেব্রুয়ারির আটে সূর্যাস্ত হলেও, জ্ঞানের প্রদীপ রইল মাত।
কাপাসিয়ার ডিগ্রি কলেজ, আটটি হাই স্কুলের দীপশিখা,
তিনি ছিলেন কৃষ্ণচূড়া—শিক্ষার আগুনে দগ্ধ কিন্তু মহামহিমা।

১৯৪৪ এ হলেন ইন্সপেক্টর—বেঙ্গলের আকাশে ঝড়ের ডাক,
১৯৪৬ এ জুট ইন্সপেক্টর—কর্মের খাপে বজ্রের ফাঁক।
৩ মার্চ ১৯৮৯ এ অস্ত গেলেন—অস্তগামী সূর্য পশ্চিমে,
তবু আজো তার নাম বেজে ওঠে—দিগন্তের শঙ্খ নিশীথে।

ঈদগাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৫১ থেকে প্রধান—
যেন স্নিগ্ধ নদীর ধারায় ভেসে আসা শাপলা-খচিত গান।
তাজউদ্দিনের গুরু তিনি, অভিভাবক ছায়া-বট,
রাজনীতির অরণ্যে তিনি শিমুলের মতো অটল, কঠিন, তবু লালমত।

ধলাগড়ের উঠোনে তিনি ছিলেন প্রভাতের শীতল শিশির,
তাজউদ্দিনের ডায়েরিতে তাই বাজে তাঁর নাম অমৃত নীর।
চরসিন্দুরের কন্যাকে বিয়ে করে গড়লেন সংসার-আকাশ,
প্রেম যেন শিউলির সুবাস, সংসার যেন নদীর বিশ্বাস।
--------------------------------------------------------

No comments:

Post a Comment