Monday, September 8, 2025

কাপাসিয়ার বাউল শিল্পী,ফজলুল হক

 কাপাসিয়ার বাউল শিল্পী,ফজলুল হক

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর
*****************************************

শিশুত্বের আকাশে, হৃদয়ের বনে,
শোনেছি সুর, কোকিল কণ্ঠে জননে।
“কোকিল থাকো তুমি বনে নিশিতে আসিও রে,
কোকিল আছে কথা গোপনে রে, উড়ে যাও বনের কোকিল রে,”
এই সুরে হৃদয় ভরে, মধুর মন্দ্রে।
১৯৫৪ সালে, কাপাসিয়ার টোকে জন্মলাভ,
সুলতানপুরের তালুকদার ঘরে, শান্তির আশ্রয়-ভাব।
পিতা মরহুম আব্দুস সামাদের আদর-স্নেহে,
বড়ে উঠল বাউল ফজলুল হোক, কণ্ঠে প্রাণের সুরে।
আশির দশকের মঞ্চে গাজীপুর-নরসিংদী-কিশোরগঞ্জে,
যেখানে তিনি, সেখানকার হৃদয় বাজে ঢল ভরে।
যে অনুষ্ঠানে ছিলেন তিনি, আনন্দের ঢেউ উঠতো উঁচু,
যেখানে নেই, সেখানে যেন শুন্যতা নেমে আসে নীরবে।
দুটি ধারার বাউল, দেশেই চেনা,
এক দেহতত্ত্ব আর মানবধর্মে ভরা।
অন্য দেহতত্ত্বে প্রেম, বিরহের বেদনা মিশে,
ফজলুল হোক ছিলেন এ দ্বিতীয় ধারার স্বরময় সিংহাসনে।
তার গানে প্রেম, বেদনা, হাসি-কান্নার ছন্দ,
শ্রোতার অন্তরে প্রতিচ্ছবি, হৃদয় ভরে অম্লান বন্ধ।
গ্রামের কৃষক, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত, প্রান্তরচারী,
সকলের মন খোরাক, আনন্দের উৎস, ফজলুল হোকই প্রাণভরী।
নিজেই লিখেছেন বিচ্ছেদ ও ব্যথার গান,
“কোকিল থাকো তুমি বনে”, “তাল গাছেরই আগায় বাবুই বানাইছে কোন বাসা” প্রাণে ধ্বান।
“আমি বলি না কারো সনে রে, যে দুঃখ অন্তরে রে আমার,”
এই বেদনার সুরে মিলে মানুষের অন্তরের বার্তা বার্তা।
২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর, মৃত্যুর হাতেখড়ি নিলেও,
কণ্ঠের কোকিল উড়ে চলে বনের গভীরে অম্লান।
সুরের অলঙ্কারে, হৃদয়ের ভাষায় বাঁচে,
ফজলুল হোক—কাপাসিয়ার বাউল, গ্রামীণ মনের অবিনাশী স্পন্দন হয়ে।
--------------------------------------------------------------------

No comments:

Post a Comment