Thursday, September 11, 2025

এক অনন্ত দীপ্তি

 এক অনন্ত দীপ্তি

কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা।
রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর।
*********************************
টোকের মাটিতে, মুসলিম পরিবারের আলোয় জন্ম নিলেন তিনি,
১৯৩৪ সালের ১লা নভেম্বর, প্রভাতের রোদে ভরে উঠল জীবন।
টোক ইউনিয়নের গুণীজনের মাঝে উজ্জ্বল তার দীপ্তি,
মানবিকতা, সততা ও ভ্রাতৃত্বের পথে এগিয়ে চললেন তিনি।

শৈশব কাটল গ্রামের মাঠ-মালা আর বটবৃক্ষের ছায়ায়,
প্রকৃতির মাঝে রঙে-মেশায় গড়লেন নৈতিকতার প্রথম পাঠ।
মরহুম শরীফ মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ—নামটি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা,
১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত গাজীপুর জেলা পরিষদের সদস্য।

জেলার উন্নয়নের কাজে রেখেছিলেন অপরিসীম অবদান,
এলাকাবাসীর সঙ্গে মিলেমিশে করলেন অগাধ সেবা ও নেতৃত্ব প্রদর্শন।
রাস্তা, ব্রিজ, বিদ্যুৎ ও পানীয় জল—সবই তার অদম্য প্রচেষ্টায় জীবন্ত হলো,
গ্রামের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে গেল উন্নয়নের আলো।

পেশায় ব্যবসায়ী, চিত্তে উদার, প্রাণে দানশীল,
লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল ৩১৫ বি২-এর ডিস্ট্রিক চেয়ারম্যান ছিলেন সক্রিয়।
চক্ষু হাসপাতাল ও ব্লাড ব্যাংকের আজীবন দাতা,
মানুষের কল্যাণে জীবন উজাড় করে দিয়েছিলেন উদার ও অনন্য হৃদয়ে।

দূরদৃষ্টি, সঠিক বিচারবুদ্ধি আর উদারতা—এলাকার মানুষের জন্য তিনি ছিলেন দিশারী,

প্রত্যেক চোখে হাসি, প্রত্যেক প্রাণে আশার আলো পৌঁছে দিয়েছিলেন।
১৯৮৭ সালে টোক ইউনিয়নে মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা,
এলাকার মানুষের সঙ্গে ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়।

কলেজটি পেল সরকারি স্বীকৃতি, অনুদান, জাতীয়করণ,
এলাকাবাসীর প্রস্তাবনায় নামকরণ—শরীফ মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মহাবিদ্যালয়।
ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে হাসি, শিক্ষার আলো ছড়াল চারদিকে,
শিক্ষার আলো দিয়ে তিনি কেটে দিল অন্ধকারের সব প্রাচীর।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সাহায্যের হাত প্রসারিত করেছিলেন,

ঢাকার বাসাবো জামে মসজিদ ও এতিমখানা—উদারতার নিদর্শন।
টোক নয়ন বাজার জামে মসজিদ, কলেজ জামে মসজিদ,
শ্রীপুর কলেজ জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা—সবই তার সহায়তার সাক্ষ্য।

প্রার্থনার শব্দ, মানবিক সেবার প্রতিফলন,
প্রকৃতির মতো নির্মল তার হৃদয়ের দীপ্তি, অম্লান অনন্ত।
স্থানীয় ও বহির্বিশ্বে ছড়িয়েছে তার দানের ছোঁয়া,
মানবতার প্রতি নিষ্ঠা সত্যিই ছিল অনন্য।

এলাকাবাসীর সঙ্গে মিলেমিশে সব উদ্যোগে তিনি নেতৃত্ব দান,
ধর্ম, শিক্ষা ও সমাজ—সব ক্ষেত্রে রেখেছেন সেবার প্রমাণ।
প্রত্যেক পাথরে, প্রত্যেক প্রাঙ্গণে তার স্মৃতি,
আলোর দ্যুতি হয়ে জ্বলে, আঁধারের মাঝেও পথ দেখায়।

৪ঠা জুলাই ২০১০ সালে মৃত্যুবরণ করেছিলেন তিনি,
কিন্তু তার কাজ বাঁচে মানুষের মনে চিরস্মৃতির ছায়ায়।
তার কর্ম, দান, প্রতিষ্ঠা—সবই ইতিহাসে লিখিত,
এলাকার মানুষের হৃদয়ে চিরন্তন দীপ্তি হয়ে জ্বলিত।

মৃত্যুর নিস্তব্ধতায়ও তার নাম,
সেবা ও দানের গল্প হয়ে নদীর মতো বয়ে যায়, শান্ত ও অমলিন।
জন্মেছিল টোকের মাটিতে, জীবন ছড়িয়েছে সবখানে,
মহাবিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা—তার নাম জড়ানো সব পাথানে।

শরীফ মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ (জন্ম: ১৯৩৪, মৃত্যু: ২০১০)—এক মহান ব্যক্তি,

টোক ইউনিয়নের মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছেন চিরন্তন স্মৃতিতে।
প্রতি চোখে হাসি, প্রতি হৃদয়ে ভালোবাসা,
এক অনন্ত দীপ্তি হয়ে জ্বলে ওঠে তার স্মৃতি, অম্লান, অমোঘ, অমলিন।
-------------------------------------------------------------


No comments:

Post a Comment