ইতিহাসের অমর দীপ্তি
কলমেঃ মোঃ আমিনুল এহছান মোল্লা।তারিখঃ ০৪-০৯-২০২৫ ইং
স্থানঃ রাওনাট,কাপাসিয়া,গাজীপুর।
*************************
ঢাকার মাটিতে ১৯৩২, ২৪ ডিসেম্বরের প্রভাতে,
জন্ম নিলেন জোহরা, আলোয় ভরা এক আঁধারে।
সৈয়দ সেরাজুল হকের স্নিগ্ধ শিক্ষার আলো,
মাতার মমতা নিয়ে বোনা জীবনখানি হাসিমুখে ভালো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানে জ্ঞান সমাহার,
তৃপ্তি আর ত্যাগের মিলন, সাহসের প্রখর উদ্ভার।
১৯৫৮ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের ধ্বনি,
রাজনীতির মাঠে দাঁড়ালেন অদম্য মনোবলিনী।
১৯৫৯ সালের ২৬ এপ্রিল, রাত চারটায়,
বেলী ফুল হাতে বেঁধে দিলেন দাম্পত্যের পথযাত্রায়।
তাজউদ্দীনের সঙ্গে শুরু হলো নিঃস্বার্থ জীবনযাপন,
দেশ ও জাতির জন্য মিলল হৃদয়ের অনন্য প্রেরণ।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে,
স্বামী পাশে, সাহসের দীপ জ্বেলে অন্ধকারে।
শরণার্থী শিবিরে নারী পুনর্বাসনে দান,
ঝড়-ঝঞ্ঝা সামলে করলেন ত্যাগের মহিমান্বিত প্রমাণ।
বঙ্গবন্ধুর ১৫ আগস্টে জীবনহানি,
৩ নভেম্বর কারাগারে স্বামীসহ চার নেতার কল্পনা অচেনা।
১৯৭৭ সালের এপ্রিল, আহ্বায়ক হয়ে উঠলেন অদম্য,
সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের বাতি জ্বেলালেন অক্ষয়।
দলের প্রাণে প্রাণ সঞ্চার, শান্তি ও ঐক্য বজায়,
প্রচণ্ড ঝুঁকি, হুমকি, তবু ছিলেন দৃঢ়মনা মহৎ।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে দলে যোগ দিলেন,
সভাপতিমণ্ডলীতে দায়িত্ব নিয়ে দলকে শক্তি দিলেন।
পারিবারিক জীবনও ছিল অনন্য—চার সন্তান সুখী,
শারমিন, সিমিন, মাহজাবিন, তানজিম—সবাই প্রেরণার মুখী।
পাকিস্তান মিলিটারির তাড়া, গ্রামান্তর পথ অতিক্রম,
পরিবার নিয়ে সাহসী পদক্ষেপ, মানবিক ত্যাগে পরিপূর্ণ অন্বেষণ।
জোহরা ভ্রমণ করে দল পুনর্গঠন, নেতা ও কর্মী উজ্জীবিত,
শান্তি ও ঐক্য রক্ষা, দুঃসাহসিক পদক্ষেপে অনন্য অভিপ্রেত।
প্রাকৃতিক উপমায় জীবন, নদী ও বনে প্রেরণার প্রতিধ্বনি,
অগ্নি, বৃষ্টি, চাঁদনি—সব মিলিয়ে তাঁর ত্যাগের ছায়া ধ্বনি।
২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর, বিদায় নিলেন নিঃশব্দে,
জোহরার জীবন, ত্যাগ ও সাহস আজও স্মরণীয় প্রেরণায় ভেসে।
নীরব নক্ষত্রের মতো দৃষ্টি, নদীর স্রোতের মতো ধৈর্য,
জোহরা তাজউদ্দীন—আলোকিত নারী, ইতিহাসের অমর দীপ্তি।
--------------------------------------------------------
No comments:
Post a Comment